অনিন্দ্য বসু। নিজস্ব চিত্র
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দক্ষিণ শহরতলির নোদাখালি থানার আইসি অনিন্দ্য বসুর (৪৫)। বুধবার গভীর রাতে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। এই প্রথম রাজ্য পুলিশের কোনও ইনস্পেক্টর করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেলেন।
ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, গত ১২ অক্টোবর করোনার একাধিক উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করানো হয়েছিল অনিন্দ্যবাবুকে। তার পরে ওই হাসপাতালেই অনিন্দ্যবাবুর চিকিৎসা চলছিল। এর পরে তাঁর শ্বাসযন্ত্রে অতিমাত্রায় সংক্রমণ ধরা পড়ে।
সপ্তাহখানেক তিনি শ্বাসকষ্টে ভোগেন। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও দ্রুত কমছিল। বুধবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাঁকে ইএম বাইপাস সংলগ্ন ওই বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই গভীর রাতে মৃত্যু হয় অনিন্দ্যবাবুর।
আরও পড়ুন: ঠেকে শিখে ‘দায়িত্ববোধের’ কালীপুজো
রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের ব্যাচের অফিসার ছিলেন অনিন্দ্যবাবু। প্রশিক্ষণের পরে নদিয়া জেলার একাধিক থানায় ওসি হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বছর দেড়েক আগে নোদাখালি থানার দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। পঞ্চসায়র থানা এলাকার গড়িয়ার বাসিন্দা অনিন্দ্যবাবুর বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, এক কন্যাসন্তান এবং বাবা রয়েছেন।
ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, অনিন্দ্যবাবুর পরিবারের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সরকারের তরফে আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। মার্চ মাস থেকেই অতিমারির এই সময়ে নিজের থানা এলাকায় সক্রিয় ভাবে নানা কাজে সশরীরে যুক্ত ছিলেন এই কোভিড-যোদ্ধা। এলাকাভিত্তিক সচেতনতার প্রচার, আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া, আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করানো— সব কিছুরই ব্যবস্থা করেছেন তিনি। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণশিবিরে রাখার ব্যবস্থা করা থেকে শুরু ত্রাণ বিলির কাজেও অংশ নিয়েছিলেন অনিন্দ্যবাবু। দক্ষ পুলিশ অফিসার হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল।