প্রতীকী ছবি।
বড়দিন থেকে বর্ষবরণের উৎসবে শামিল হতে শহরের বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানের পাশাপাশি ভিআইপি রোডের ধারে শ্রীভূমিতেও ঢল নেমেছিল আমজনতার। আর তার পরেই ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। গত কয়েক দিনে দক্ষিণ দমদম ও উত্তর দমদম পুর এলাকা মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ জনেরও বেশি। ফলে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দমদমের তিন পুর প্রশাসনের। যদিও উত্তর দমদম পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, রবিবার পর্যন্ত তাঁদের পুর এলাকায় এক জন সংক্রমিত হয়েছেন।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, তাঁদের এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০। যার বেশির ভাগই ছড়িয়েছে বর্ষশেষে শ্রীভূমির জমায়েত থেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ভিআইপি রোডের ধারে বর্ষবরণের সময়ে যে ভাবে জমায়ত করেছেন সাধারণ মানুষ, তখনই সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে।
যদিও পুর প্রশাসনের মতে, এই অনুষ্ঠানগুলি ঘিরে মানুষের রুজি-রোজগারও অনেকটাই নির্ভর করে। তাই সে দিকটাও ভাবতে হয়েছে প্রশাসনকে। তবে সাধারণ মানুষও কোভিড-বিধি ভুলে, মাস্ক খুলে জমায়েতে শামিল হয়েছেন বলেও অভিযোগ করছে পুরসভা। যদিও পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক দিনে দক্ষিণ দমদমে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা কমেছে। গত দু’দিনে মাত্র ছ’জন আক্রান্ত
হয়েছেন। রবিবার পর্যন্ত নতুন করে সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৬। তাঁদের মধ্যে এক জন ওমিক্রন সন্দেহে আক্রান্ত হয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে তিন পুর কর্তৃপক্ষেরই দাবি, পরিস্থিতি এখনও আতঙ্কের বা উদ্বেগজনক নয়। ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক সব রকমের পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। কোথাও কোভিড-বিধি ভঙ্গ হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছে পুর প্রশাসন।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জানাচ্ছেন, শ্রীভূমি এবং বাঙুরের দু’টি ওয়ার্ডে এই মুহূর্তে করোনার প্রকোপ সর্বাধিক। তবে গত দু’দিনে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকায় দুশ্চিন্তা কিছুটা কমেছে। সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই দু’টি সেফ হোম চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পুর হাসপাতালের নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্টটিও চালু করে দেওয়া হয়েছে। তবে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে সচেতনতা প্রচারের উপরে।
যদিও নতুন বছরের দ্বিতীয় দিন, রবিবারেও দেদার কোভিড-বিধি ভাঙার ছবি দেখা গিয়েছে দমদম স্টেশন থেকে শুরু করে নাগেরবাজার, দমদম, গোরাবাজার এলাকায়। দক্ষিণ দমদম পুর প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হচ্ছে। বিধি ভুলে জমায়েত করলে বা মাস্ক না পরলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, রবিবার পর্যন্ত নতুন করে ১৬ জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর এসেছে। পুরসভার উপ মুখ্য প্রশাসক বরুণ নট্ট জানান, ওয়ার্ড এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা, সচেতনতা প্রচারের কাজ জোরকদমে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী দিনে আরও কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তা নিয়ে দ্রুত ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। পাশাপাশি সেফ হোম প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। একই ধরনের ব্যবস্থাপনার পথে হাঁটছে উত্তর দমদম পুরসভাও। যদিও পুরসভার মুখ্য প্রশাসক বিধান বিশ্বাস জানান, পুর এলাকায় রবিবার পর্যন্ত নতুন করে মাত্র এক জন সংক্রমিত হয়েছেন। তবে সতর্কতামূলক সব রকমের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সেফ হোমও তৈরি রাখা হচ্ছে।