নজরে: হাওড়ার কাজিপাড়ায় চলছে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা। শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
সরকারি ভাবে ঘোষণা করা না হলেও হাওড়ার কয়েকটি এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলেই মেনে নিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। যে কারণে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। এঁদের অধিকাংশ আবার গুরুতর ভাবে সংক্রমিত (লেভেল ফোর) হওয়ায় আরও কোভিড হাসপাতালের প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন কোভিড হাসপাতালের জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আর্জি জানাচ্ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সেই আবেদন মেনে শুক্রবার বালির শ্রমজীবী হাসপাতালের ১০০টি শয্যা কোভিড চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করেছে দফতর।
এত দিন হাওড়ার সাতটি কোভিড হাসপাতালে মোট শয্যা ছিল ৮৫৩টি। এর সঙ্গে শ্রমজীবী হাসপাতালের ১০০টি শয্যা যোগ হওয়ায় মোট কোভিড-শয্যা হল ৯৫৩টি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, হাওড়ায় কোভিড রোগীর সংখ্যা একসঙ্গে অনেক হচ্ছে না, দুশো থেকে তিনশোর মধ্যে থাকছে। এটাই আশার। তবে শহরাঞ্চলে হাসপাতালের শয্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, শহরে লেভেল ফোর মাত্রার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে আশঙ্কা করছি, কয়েক জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। তবে আরও পরীক্ষা না করে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না।’’
আরও পড়ুন: বাদুড়িয়ায় বসেই কাশ্মীরি যুবকদের ওয়াজিরিস্তানের জঙ্গি ট্রেনিং ক্যাম্পে পাঠাত তানিয়া
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দু’হাজার পেরোল, বাড়ল সংক্রমণের হারও
ওই কর্তা জানান, এ জন্য হাসপাতালের কোভিড শয্যা বাড়ানোর বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। বালির শ্রমজীবী হাসপাতালের অ্যানেক্স বিল্ডিং না পাওয়া গেলেও মূল ভবনের ১০০টি শয্যা পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও শহরের কিছু বেসরকারি নার্সিংহোমকেও নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া পুরসভার সংযুক্ত এলাকার ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড-সহ উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। যেমন, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতানপুর, মন্দিরপাড়া এলাকার অনেক বাসিন্দা এক সঙ্গে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও জেলা প্রশাসন এখনও পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডকে কন্টেনমেন্ট জ়োন বলে ঘোষণা করেনি। অভিযোগ, ওই এলাকার কোভিড আক্রান্তেরা বিনা বাধায় ঘুরছেন। অন্য বাসিন্দাদের বেশির ভাগের মধ্যে বিশেষ স্বাস্থ্য-বিধি মানার কোনও ইচ্ছেই চোখে পড়ে না। স্থানীয় এক বাসিন্দা গৌতম পাত্রের দাবি, ‘‘প্রথম থেকেই এই ওয়ার্ডে প্রশাসনের নজর ছিল না। এখন প্রতিদিন একসঙ্গে বহু বাসিন্দা সংক্রমিত হচ্ছেন। পুরসভার পক্ষ থেকেও এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজ নিয়মিত হচ্ছে না।’’
এ দিকে জেলায় চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে যে পরিদর্শক দল গড়া হয়েছে, সম্প্রতি তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, হাওড়ায় সরকার অধিগৃহীত কোভিড হাসপাতালগুলিতে এখনও হাই ফ্লো নেজ়াল ক্যানুলা (এইচ এফ এন সি) নেই। এমনকি ফুসফুসের পরীক্ষায় ব্যবহৃত হাই-রেজ়োলিউশন কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (এইচ আর সি টি) যন্ত্রের মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর উন্নতি করার সব চেষ্টা হচ্ছে। যেখানে ওই সব যন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে নতুন যন্ত্র পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে।’’