প্রতীকী ছবি।
আংশিক নয়। অগস্টের প্রথম দশ দিনের মধ্যে দু’টি দিন তাদের অধীনে থাকা এলাকায় পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করল বরাহনগর পুরসভা। ওই দশ দিনের মধ্যে রাজ্য প্রশাসনের নির্ধারিত দু’টি দিনও রয়েছে। সব মিলিয়ে আজ, শনিবার ১ অগস্ট থেকে ১০ অগস্ট পর্যন্ত বরাহনগরে চার দিন পুরোপুরি লকডাউন থাকবে। শুক্রবার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ব্যারাকপুর মহকুমায় অত্যধিক করোনা আক্রান্তের তালিকায় যে ক’টি পুরসভা রয়েছে, তার মধ্যে বরাহনগর একটি। ইতিমধ্যেই সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। গত ২৮ ও ২৯ জুলাই দু’দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ জন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বরাহনগর বাজার, অশোকগড় বাজার, ইউ বি কলোনি, গোকুলবাজার, ডানলপ বাজার, নিয়োগী বাজার, আর আই সি বাজার এবং বঙ্গলক্ষ্মী বাজার সংলগ্ন এলাকার। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় কয়েক দিন আগে থেকে গোটা পুর এলাকায় আংশিক লকডাউন চালু করে পুর প্রশাসকমণ্ডলী। প্রতিদিন বেলা ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকছিল বাজার-দোকান। ওই সময়ের পরে এলাকার নির্দিষ্ট কয়েকটি রাস্তা ছাড়া অন্যত্র যান চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তবে আজ থেকে বদলাচ্ছে সেই নিয়ম। পুরসভা সূত্রের খবর, আগামী ৫ এবং ৮ অগস্ট সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য প্রশাসন। এর পাশাপাশি ৪ এবং ১০ অগস্ট বরাহনগর এলাকায় পুরো লকডাউন থাকবে। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘অনেক ছোটখাটো দোকানদার, ব্যবসায়ী রয়েছেন। দৈনিক মজুরির কর্মীরা আছেন। তাঁদের কথা চিন্তা করেই ছ’দিন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ ১০ অগস্টের মধ্যে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু বরাহনগরে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে কেন?
পুরকর্তাদের দাবি, শহরের একেবারে লাগোয়া শহরতলি হল বরাহনগর। সিঁথির মোড়, কাশীপুর এলাকায় রাস্তার একটি প্রান্ত বরাহনগর পুরসভার অধীনে, উল্টো দিক কলকাতা পুরসভার আওতায়। আবার হাওড়া-হুগলিরও লাগোয়া শহরতলি বরাহনগর। ৭.২ বর্গকিলোমিটার এই এলাকায় জনসংখ্যা তিন লক্ষাধিক। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘‘অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় কোথা থেকে কে ঢুকছেন বা বেরোচ্ছেন, তা সব সময়ে বোঝা যাচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতিও খারাপ হচ্ছে। তবে সব সময়েই নাগরিকদের সচেতন করা হচ্ছে।’’
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইতিমধ্যেই বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দৈনিক ৩০টি করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠকে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর তরফে জানানো হয়েছিল, বরাহনগরে সেফ হাউস তৈরি হচ্ছে। অপর্ণাদেবী জানান, আলমবাজারে গঙ্গার ধারে একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টার্সের দু’টি তল মিলিয়ে মোট ১২টি ঘর সংস্কার করে সেখানে সেফ হাউস চালু করা হবে। তার কাজ শুরু হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)