প্রতীকী ছবি
ডেঙ্গি প্রতিরোধের ধাঁচে করোনা মোকাবিলায় নামছে পুর প্রশাসন। প্রাথমিক পর্যায়ে শহরের প্রতিটি কন্টেনমেন্ট জ়োনের জন্য একটি করে দল তৈরি করছে কলকাতা পুরসভা। প্রতি দলে থাকবেন পাঁচ জন স্বাস্থ্যকর্মী। যাঁদের প্রধান কাজ হবে, তাঁর নির্দিষ্ট জ়োনের বাসিন্দাদের বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া।
বুধবার পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, কলকাতা পুরসভায় প্রায় ৬৫০ জন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের কাজে আরও কর্মী আছেন। তাঁরা সকলেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া দমনের পাশাপাশি কন্টেনমেন্ট জ়োনে করোনা মোকাবিলার কাজ দু’-এক দিনের মধ্যে শুরু করে দেবেন। এঁদের কাজের সঙ্গেই যুক্ত থাকবেন ১৬টি বরোর পূর্ব নিযুক্ত ১৬ জন নোডাল অফিসার এবং ম্যানেজার ও ডেপুটি ম্যানেজার পদমর্যাদার অফিসারও।
সম্প্রতি কলকাতার কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে করোনা সংক্রমণ রুখতে নবান্নে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারের বৈঠক হয়। এর পরেই পুর ভবনে বেশি সংক্রমিত কলকাতার ৪০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র। সেই বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অভিজিৎ চৌধুরীও। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে যে ভাবে পুরসভা কাজ করে, সে ভাবেই সংক্রমণ রুখতে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত বৌবাজার থানার অফিসার
তার পরেই মঙ্গলবার পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে করোনা প্রতিরোধের কর্মসূচি তৈরি করা হয়। ওই দিনের হিসেব অনুযায়ী ৩১৮টি কন্টেনমেন্ট জ়োন নিয়েই আলোচনা হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, জ়োনের সংখ্যা পরিবর্তন হওয়ার কথা বিবেচনা করেই কাজ হবে। ডেপুটি মেয়র জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী শহরে প্রায় ৭০০ জন করোনা আক্রান্ত। যাঁদের ৮০ শতাংশ পুরসভার ১-১০ নম্বর বরোর বাসিন্দা। ওই দশটি বরোর প্রতিটিতে আঞ্চলিক অফিস করা হবে। সেগুলির দায়িত্বে থাকবেন পুরসভার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পর্যায়ের পাঁচ অফিসার। সোম থেকে শনি প্রতিদিন দু’ঘণ্টা করে তাঁরা আঞ্চলিক অফিসে বসবেন। নজরদারির কাজ-সহ নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে কি না তা-ও দেখবেন।
কন্টেনমেন্ট জ়োনের দলের সদস্যেরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে কারও জ্বর-সর্দি-কাশি হয়েছে কি না, রিপোর্ট তৈরি করবেন। প্রতিদিনের রিপোর্ট দেওয়া হবে ওই জ়োনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসারকে। যিনি আবার সেটি জমা দেবেন জ়োনের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে।
ইতিমধ্যেই বরোর নোডাল অফিসার, ম্যানেজার, ডেপুটি ম্যানেজারেরা তাঁর বরোর কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দাদের ফোন করে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছেন। কারও কিছু বক্তব্য থাকলে তা শুনে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিচ্ছেন ওই জ়োনের টিমের সদস্যদের। অসুস্থদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন সদস্যেরাই।
অতীনবাবু জানান, ওয়ার্ডের ছোট অংশে প্রতিটি জ়োন থাকায় নজরদারি চালাতে অসুবিধা হবে না। নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করতে ১৬টি বরোয় একটি করে গাড়ি এবং পাঁচটি করে হ্যান্ড মেশিন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বোর্ডের মেয়াদ শেষ, প্রশাসক ববির হাতে কলকাতা, চ্যালেঞ্জের পথে বিজেপি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)