—ফাইল চিত্র।
নাম সেফ হোম। অর্থাৎ নিরাপদ ঠিকানা। মূলত উপসর্গহীন করোনা-আক্রান্তদের রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। কিন্তু, সেই নিরাপদ ঠিকানাতেই হানা দিচ্ছে সাপ। যেখান-সেখান থেকে যখন-তখন সাপ বেরোচ্ছে বলে অভিযোগ। ঠিকানার নাম বারাসত স্টেডিয়াম। ফলে আতঙ্কিত রোগীরা। অভিযোগ পৌঁছেছে বারাসত পুর কর্তৃপক্ষের কাছেও। বুধবার ওই সেফ হোমে হানা দিয়ে অবশ্য সাপ পাওয়া যায়নি। তবে ফের অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
করোনা-রিপোর্ট পজ়িটিভ, অথচ কোনও উপসর্গ নেই। এমন রোগীদের এখন বাড়িতে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তবে তাঁদের বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতে হবে। এবং তাঁর যত্ন নেওয়ার লোক থাকতে হবে বাড়িতে। কিন্তু অনেক বাড়িতেই তেমন ব্যবস্থা নেই। এমন রোগীদের কথা ভেবেই মূলত সব পুরসভা এবং পঞ্চায়েত এলাকায় সেফ হোম তৈরি করতে বলেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে চিকিৎসক-নার্স এবং ওষুধ থাকার কথা।
জেলা সদরের সেফ হোম তৈরি হয়েছে বারাসত স্টেডিয়ামে। সেখানে বর্তমানে ১২ জন রয়েছেন। সব ব্যবস্থা করেছে বারাসত পুরসভা। খাবার এবং অন্য পরিষেবা দিচ্ছে তারা। ওষুধ এবং অন্য পরিষেবা দেওয়ার কথা স্বাস্থ্য দফতরের। দিন দুয়েক আগে সেফ হোম থেকে কয়েক জন কোভিড রোগী বেরিয়ে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। সংক্রমণের আতঙ্কে কেউ তাঁদের কাছাকাছি যাওয়ার সাহস পাননি।
কয়েক জন মোবাইলে ভিডিয়ো করেন ওই রোগীদের কথা। সেই ভিডিয়োয় (তার সত্যতা অবশ্য আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখা যাচ্ছে, এক জন বলছেন, ‘‘আমরা ১২ জন এখানে আছি। তার মধ্যে দু’জন মহিলা। এখানে এমনিতে খাবার ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে। তবে চার দিকে সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা আতঙ্কিত। রাতে ঘুমের মধ্যে কী হয়ে যাবে জানি না।’’
ওই রোগী জানান, এই ঘটনা জানানোর পরে পুরসভা থেকে এক জনকে দিয়ে কার্বলিক অ্যাসিড পাঠানো হয়েছে। তাতেও আতঙ্ক যাচ্ছে না তাঁদের। ভিডিয়োয় আরও কয়েক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘খাবার নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। নিয়মিত চিকিৎসক থাকলেই হবে। তবে সাপগুলোর একটা ব্যবস্থা হোক। খুব ভয় করছে।’’
বুধবার দুপুরে পুরসভার তরফে বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়। সাপ ধরার জন্য কয়েক জন বিশেষজ্ঞ সেফ হোমে আসেন। কিন্তু তাঁরা কোনও সাপ খুঁজে পাননি। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামে রেললাইন লাগোয়া এলাকার ঝোপে কিছু দাঁড়াশ সাপ রয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে বলে সাপের খোঁজ মেলেনি। আবহাওয়া ভাল হলে সেখানে ফের সাপ খুঁজে দেখা হবে। বন দফতরকেও খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তখন সাপ উদ্ধার করা যাবে।’’