ফাইল চিত্র।
লকডাউনের সময়ে শ্রমিকেরা না থাকায় বন্ধ রাখতে হয়েছিল কলকাতা পুরসভার বস্তি দফতরের অনেক কাজ। বর্তমানে লকডাউনের নিয়ম শিথিল হওয়ায় অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে সেই কাজ ফের শুরু করার পরিকল্পনা করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু স্বাস্থ্য-বিধি মেনে ওই শ্রমিকদের কোথায় রাখা হবে, তা-ই এখন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরসভার।
পুরসভার বস্তি দফতর সূত্রের খবর, শহরে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি বস্তি রয়েছে। ওই সব এলাকার উন্নয়নের জন্য গত আর্থিক বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই অর্থের প্রায় ৮০ শতাংশ দিয়ে বস্তি উন্নয়নের কাজ হওয়ার পরে গত মার্চে লকডাউনের ফলে তা বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকদের অনেকেই যে যাঁর বাড়ি ফিরে যান। তবে বর্তমানে অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়েই বস্তি এলাকার সেই সব কাজ শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর তাই রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে ওই সব শ্রমিকের থাকার জন্য ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের জায়গা খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছে বস্তি দফতর। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা বস্তি দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, “বস্তি দফতরের থেমে থাকা যাবতীয় কাজ যাতে দ্রুত শেষ করা যায়, তার জন্য ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের জায়গা খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছি। আপাতত যে ক’জন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, তাঁরা যাতে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে শহরে কোথাও থাকতে পারেন, সেই ব্যাপারটি দেখা হবে।’’ স্বপনবাবু জানাচ্ছেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে সমস্ত কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে, সেখানেই আপাতত শ্রমিকদের রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোনও ফাঁকা জায়গা পাওয়া গেলে সেখানেও শ্রমিকদের রাখা হতে পারে। গত সপ্তাহে পুরসভায় বস্তি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করতে যে পরিমাণ শ্রমিকের প্রয়োজন, তা এখনও পাওয়া যায়নি। তবু অল্প শ্রমিক দিয়েই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে চাইছে পুরসভা। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও পুর এলাকায় ওই কাজ দ্রুত শেষ করার আর্জি জানিয়েছেন ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরেরা। বস্তির শৌচালয়, রাস্তা, আলো থেকে শুরু করে ফুটপাতে পেভার ব্লক বসানো সংক্রান্ত সব কাজই সংশ্লিষ্ট দফতরের আওতায় পড়ে।
কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেন, “আমার ওয়ার্ডে কিছু বস্তিতে রাস্তার পেভার ব্লকের কাজ বাকি। সেগুলি দ্রুত করার জন্য বস্তি দফতরকে জানিয়েছি।’’ কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর বরো কোঅর্ডিনেটর তরুণ সাহা বলেন, “শ্রমিকের অভাবে বস্তি দফতরের অনেক কাজ এখনও বাকি। শ্রমিকদের রাখার জন্য ইতিমধ্যেই এলাকার ফাঁকা নৈশাবাস ঠিক করে রেখেছি।’’