ফাইল চিত্র।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ৫ জুন কলকাতা পুরসভা এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০ জন। ১২ জুন, গত রবিবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০। অর্থাৎ, মাত্র সাত দিনেই শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তিন গুণ। তবে উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণে সংক্রমিতের হার বেশি বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফের বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মাসখানেক আগে শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল নগণ্য। তখন বেশির ভাগ বরো এলাকায় এক জনও সংক্রমিত ছিলেন না। ১৯ এপ্রিল শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল শূন্য। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শহরে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল গড়ে ১৫-২০। কিন্তু গত এক সপ্তাহে প্রায় প্রতিটি বরোয় কেউ না কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে, সংক্রমণের হারের নিরিখে উত্তরের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতা। পুরসভা সূত্রেজানা গিয়েছে, গত রবিবার আট নম্বর বরো এলাকায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ জন। অন্য দিকে, ১০ নম্বর বরো এলাকায় সে দিন আক্রান্তেরসংখ্যা ছিল ১৫। আট নম্বর বরো, অর্থাৎ বালিগঞ্জ, ভবানীপুর,টালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, রবীন্দ্র সরোবর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে খবর মিলেছে। অন্য দিকে, ১০ নম্বর বরো, অর্থাৎ গরফা, লেক, যাদবপুর, গল্ফ গ্রিন, নেতাজিনগর এলাকাতেও ছড়িয়েছে সংক্রমণ। পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগে করোনার তিনটি ঢেউয়ের সময়েও এই সমস্ত এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক।
মাত্র এক সপ্তাহে সংক্রমিতের সংখ্যা তিন গুণ বেড়ে যাওয়াকে মোটেই হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয় বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বলেন, ‘‘এক সপ্তাহে তিন গুণ বেশি সংক্রমণ নিঃসন্দেহে ভাবনার বিষয়। মানুষ যে ভাবেমাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছেন,তাতে এই প্রবণতা চলতে থাকলে ভুগতে হবে। এই মুহূর্তে প্রশাসন কঠোর না হলে বিপদ আসন্ন।’’ হঠাৎ সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পুরসভার চিকিৎসকদের একাংশও। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিশেষজ্ঞেরা আগেই জুলাই-অগস্টে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আসার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তাই জুনের মাঝামাঝি সময়ে করোনা বাড়তে থাকায় শঙ্কিত তাঁরা। চিকিৎসকেরা জানান, মানুষকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকেও।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সোমবার বলেন, ‘‘করোনা যে হারে বাড়ছে, তাতে ভয়ের কারণ নেই। যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা বেশির ভাগই উপসর্গহীন। তবে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, দয়া করে বেরোনোর সময়ে মাস্ক পরুন। করোনাকে কোনও মতেই হালকা ভাবে নেবেন না।’’
অতীন আরও জানিয়েছেন, মাস্ক পরা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কলকাতা পুরসভার তরফে প্রচার চলছে। আগামী দিনে এই প্রচার আরও বাড়ানো হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।