প্রতীকী ছবি।
আইসিইউয়ের খোঁজে ৭৭ বছরের বাবাকে নিয়ে সারা রাত মেয়ে একের পর এক হাসপাতালে ঘুরেছিলেন। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে একটি নার্সিংহোমে রিষড়ার বাসিন্দা অলোকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভর্তি করতে সক্ষম হন মেয়ে এণাক্ষী মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ঘোরার ধকল নিতে পারেননি সিওপিডি-র রোগী অলোকবাবু। চার দিনের মাথায় তিনি মারা যান। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার তিনটি বেসরকারি হাসপাতালকে মোট দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন।
গত ৪ জুলাই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় অলোকবাবুকে প্রথমে ফর্টিসে নিয়ে যান মেয়ে। চিকিৎসকেরা জানান, করোনার উপসর্গযুক্ত বৃদ্ধকে আইসিইউয়ে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু সেখানে শয্যা খালি ছিল না। এণাক্ষীর অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইট দেখে একাধিক বড় হাসপাতালে ফোন করেও শয্যা মেলেনি। গড়চায় ‘অল এশিয়া মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট’ রোগীকে আনতে বলেও ফিরিয়ে দেয়। এর পরে তপসিয়ার ফ্লেমিং হাসপাতাল অলোকবাবুকে ভর্তি নিলেও আইসিইউয়ে তাঁকে রাখা হয়নি বলে অভিযোগে জানান এণাক্ষী। সে জন্য ৪ জুলাই তিনি বাবাকে একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করেন। সেখানে ৭ জুলাই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। ওই নার্সিংহোমে বৃদ্ধের কোভিড রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল।
এ দিন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আইসিইউ খালি না-থাকলে রোগী যাতে অন্য হাসপাতালে পরিষেবা পান, ফর্টিস কর্তৃপক্ষের সেই চেষ্টা করা উচিত ছিল। ফর্টিস কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য কমিশনকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। একই ভাবে অল এশিয়া মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং ফ্লেমিং হাসপাতালের বক্তব্যও সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়েছেন অসীমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘তিন হাসপাতালের খামতিকে মান্যতা দিয়ে ফর্টিসকে এক লক্ষ এবং বাকি দুই হাসপাতালকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। রোগীর পরিজন টাকা নিতে না চাইলে মুখ্যমন্ত্রীর কোভিড তহবিলে জমা দেওয়া হবে।’’
এ দিনই অন্য একটি মামলায় সদ্যোজাতের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে ভুল করার জন্য নাগেরবাজারের এক হাসপাতালকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী মা-বাবা জানতেন, তাঁদের সন্তানের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজ়িটিভ। আদতে শিশুটির রক্তের গ্রুপ ‘ও’ নেগেটিভ। ২০১৬-র ডিসেম্বরে ওই হাসপাতালে প্রসব করেন দমদমের প্রিয়াঙ্কা ঘোষ। তিন বছর পরে সন্তানের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। তখনই ভুল ধরা পড়ে। এর পরেই স্বাস্থ্য কমিশনে যান ওই দম্পতি।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)