ছবি: সংগৃহীত
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ বার তার আঁচ এসে পড়ল কলকাতা বিমানবন্দরেও। সেখানকার এক সাফাইকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই একই দিনে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক শীর্ষ কর্তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে করোনায়। পরপর এমন দু’টি ঘটনায় আতঙ্কে কর্মী-মহল। দু’টি ক্ষেত্রেই ওই সাফাইকর্মী এবং অফিসারের সংস্পর্শে আসা অন্য কর্মী ও অফিসারদের গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, অদূর ভবিষ্যতে কর্মী-অফিসারদের মধ্যে এ ভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে উড়ান পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে।
কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, অধিকাংশ কর্মী-অফিসারের বাড়ি বিমানবন্দরের আশপাশে। বিমানবন্দরের পাশেই কর্তৃপক্ষের কর্মী-অফিসারদের দু’টি আবাসন। সেখানে যাঁরা থাকেন না, তাঁদের অনেকেই যাতায়াতের সুবিধার কারণে কাছাকাছি ফ্ল্যাট কিনে বা ভাড়া নিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী ছেলে ও বৃদ্ধকে মার, অধরা অভিযুক্তেরা
এক কর্তা জানান, বিমানবন্দর লাগোয়া পাঁচটি প্রধান পুরসভা— দমদম, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম, নিউ ব্যারাকপুর এবং বিধাননগরে কন্টেনমেন্ট জ়োন সবচেয়ে বেশি। কর্মী-অফিসারদের অনেকেই সেই সব এলাকা থেকে আসছেন। ফলে বাহ্যিক উপসর্গ না-থাকলেও তাঁদের অনেকের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে।
গত ২৮ মে কলকাতা থেকে অভ্যন্তরীণ উড়ান চালু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার যাত্রী কলকাতায় এসেছেন। শহর ছেড়ে গিয়েছেন ৪০ হাজার। কলকাতায় আসার পরে এত জনের মধ্যে মাত্র দু’জনের দেহে সংক্রমণের আশঙ্কা করে তাঁদের কোয়রান্টিনে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। যদিও কারও দেহেই সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। ফলে যাত্রীদের থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা নেই বলেই দাবি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য শুক্রবার বলেন, ‘‘যে সাফাইকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর সঙ্গে একই শিফটে কাজ করা আরও চার জনকে আপাতত কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে। যে ঘরে ওই সাফাইকর্মীরা বসেন, সেই ঘরও জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।’’ বিমানবন্দরের সাফাই এখন মূলত বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে করানো হয়। তার বাইরেও পুরনো কয়েক জন স্থায়ী সাফাইকর্মী রয়ে গিয়েছেন। আক্রান্ত ওই কর্মী তাঁদেরই এক জন।
অন্য দিকে, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার পদমর্যাদার এক অফিসারের স্ত্রীর সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় দিন কয়েক আগে। দমদমের বাসিন্দা ওই অফিসার তার পর থেকে আর দফতরে আসেননি। বৃহস্পতিবার মারা যান তাঁর স্ত্রী। জানা গিয়েছে, তাঁর ডায়াবিটিস ছিল। ওই কর্তার সংস্পর্শে এসেছেন, এমন কয়েক জন অফিসারকে আপাতত ডিউটির তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।