প্রতীকী ছবি
করোনা-আবহের মধ্যেও ডেঙ্গি অভিযানের ক্ষেত্রে যাতে কোনও গাফিলতি না হয়, সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন পতঙ্গবিদেরা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এবং কলকাতা পুরসভাও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
তবু একটি আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে পতঙ্গবিদদের একাংশের আলোচনায়। তা হল, এডিস ইজিপ্টাই শীতকালের আগে যে ডিম পেড়ে রেখেছে, সেগুলির মধ্যে ‘ট্রান্সওভারিয়াল ট্রান্সমিশন’-এর কারণে ডেঙ্গির জীবাণু বর্তমান। কারণ, এডিস মশা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ডেঙ্গির জীবাণু ছড়িয়ে দিতে পারে। তাই লকডাউনে বাড়ির বাইরে না বেরোলেও এডিস মশার বাড়িতে ঢুকে কামড়ানোর আশঙ্কা পুরোপুরি থেকে যাচ্ছে।
পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র এ বিষয়ে জানাচ্ছেন, শীতকালে কম তাপমাত্রার সময়টুকু এডিসের ডিম না ফুটেই থাকে। জল পেলে তবেই সেই ডিম ফুটে লার্ভা বেরোয়। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘গত দু’দিনের বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন ছোট পাত্রে, নানা জায়গায় জল জমেছে। সেখানে এডিসের ডিম থাকলে ওই জল পেয়ে মশা জন্মাবে, যার মধ্যে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গির জীবাণু বর্তমান। তখন ঘরে ঢুকে সেই মশা কামড়াতে পারে।
ফলে ডেঙ্গি সংক্রমণের আশঙ্কাও পুরোপুরি থাকছে।’’
এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি অভিযান ও প্রচারের ক্ষেত্রে আলাদা পন্থা নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কারণ, পুরকর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, সাধারণ সময়েই বাড়ির ভিতরে পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের ঢুকতে দিতে চান না নাগরিকদের একাংশ। সেখানে এমন পরিস্থিতিতে বাড়িতে ঢুকে মশার আঁতুড় ধ্বংস করা অসম্ভব। তাই শুধু বাড়ির বাইরেই মশার আঁতুড় চিহ্নিতকরণ ও ধ্বংসের বিষয়টি সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক, গ্লাভস পরাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বাড়ির ভিতরে ঢুকবেন না। সেই কারণে বাড়ির বাইরে থেকে মাইকে সচেতনতার প্রচার চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ির ভিতরে যাতে জল না জমে, তা দেখতে নাগরিকদেরই সজাগ থাকতে হবে।’’ সেই সঙ্গে বাড়ির কারও সর্দি-কাশি-জ্বর হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার বা ভেক্টর কন্ট্রোল ইনচার্জের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছে। তাঁদের নাম ও ফোন নম্বরও দেওয়া হচ্ছে এলাকার বাড়িগুলিতে। যাতে প্রয়োজনে যে কেউ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুরে আবার করোনা সংক্রমণ, বন্ধ এলাকা