Coronavirus in Kolkata

রোগীকেই পোশাক কাচতে হবে শুনে ক্ষুব্ধ পরিজনেরা

বৃদ্ধের ছেলে জানান, শুক্রবার দুপুরে বাবা আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকার পরে শনিবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। করোনা হয়েছে কি না জানতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য রোগীকে প্রথমে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ থাকা বৃদ্ধ বাবাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গ্রিন বিল্ডিংয়ে ভর্তি করাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে। র‌্যাম্পে ট্রলি ওঠানোর আগেই চুক্তিভিক্তিক কর্মীরা জানিয়ে দিলেন, রোগীকে তাঁর জামাকাপড় নিজেকেই কাচতে হবে। সঙ্কটজনক রোগী কী ভাবে নিজের জামাকাপড় কাচবেন, তা ভেবে হতবাক হয়ে যান রোগীর পরিজনেরা! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার ফের প্রশ্ন উঠল কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে।

Advertisement

বৃদ্ধের ছেলে জানান, শুক্রবার দুপুরে বাবা আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকার পরে শনিবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। করোনা হয়েছে কি না জানতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য রোগীকে প্রথমে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। বাড়িতে থাকাকালীনই বৃদ্ধের অক্সিজেনের মাত্রা ৬৫ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে সেই মাত্রা ৫৭-তে নেমে যায়। চিকিৎসকেরা জানান, করোনার উপসর্গযুক্ত রোগীকে আইসিইউয়ে ভর্তি করানো প্রয়োজন। কিন্তু শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে গত ছ’মাসেও আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা না করেই রোগীকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পরে গ্রিন বিল্ডিংয়ে বৃদ্ধকে ভর্তি করানো হয়।

দুপুর পর্যন্ত গুরুতর অসুস্থ সারি (সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন্স) রোগীকে নিয়ে দুই হাসপাতাল ঘুরে ওয়ার্ডে যাওয়ার পথে চুক্তিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বৃদ্ধের পরিজনেরা। সঞ্জয়ের দাবি, ওয়ার্ডে রোগীকে ঢোকানোর সময়ে দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী জানান, রোগীকে নিজের জামাকাপড় নিজেকেই কাচতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহেই উচ্চ আদালতে যাবে অনিন্দিতার পরিবার

স্বাস্থ্যকর্মীদের বক্তব্য ছিল, রোগীর জামাকাপড় কাচলে তাঁরাও সংক্রমিত হতে পারেন। পরিজনেদের অভিযোগ, শয্যাশায়ী রোগী কী ভাবে নিজের জামাকাপড় কাচবেন এ কথা বলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, রোগীর নোংরা পোশাক পরিজনেদের দিয়ে দেওয়া হবে। তাঁরাই বাড়িতে সেগুলি পরিষ্কার করে আবার ওয়ার্ডে দিয়ে দেবেন।

প্রশ্ন হল, সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় কোভিড ওয়ার্ডে পরিজনদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তা হলে রোগীদের জামাকাপড় পরিবারের সদস্যদের হাতে দেওয়া হবে কোন যুক্তিতে! বৃদ্ধের ছেলের কথায়, ‘‘হাসপাতালে আমরা রোগীকে ভর্তি করিয়ে চলে যাচ্ছি। ওয়ার্ডে তাঁরা কী পরিষেবা পাচ্ছেন, কিছুই জানি না। স্বাস্থ্যকর্মীরা এ ধরনের কথা বলার পরে ভরসা থাকে?’’ এ দিনই আবার করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন, হাঁটাচলায় সক্ষম রোগীদের নিজের এক্স-রে রিপোর্ট আনতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনও রোগীকেই জামাকাপড় কাচতে হয় না। কোনও স্বাস্থ্যকর্মী এ কথা বলে থাকলে ঠিক বলেননি।’’


(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement