—প্রতীকী ছবি।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিধাননগর পুর এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গেল আড়াইশোর ঘরে। অবশ্য সুস্থতার হারও ৯২ শতাংশের বেশি।
সংক্রমণের এই অবিশ্বাস্য গতি দেখেও অবশ্য হুঁশ ফিরছে না অধিকাংশ মানুষের। দোকান-বাজার থেকে রাস্তার ধারের খাবারের স্টল, রেস্তরাঁ বা শপিং মল— সর্বত্রই মাস্কহীন ভিড়।
বিধাননগরের পাশাপাশি দক্ষিণ দমদম পুর এলাকাতেও আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এই পরিসংখ্যান অবশ্য পুরসভার ব্যবস্থাপনায় যে ক’টি পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে পাওয়া। এর বাইরে রয়েছে বেসরকারি জায়গায় হওয়া পরীক্ষার পরিসংখ্যানও। ফলে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যাটা আরও অনেকটা বেশি বলেই ধরে নেওয়া যায়।
পুরসভা সূত্রের খবর, কাল, বুধবার থেকে দমদমের রবীন্দ্র ভবনে চালু হবে সেফ হোম। আজ, মঙ্গলবার সেই ব্যাপারে জরুরি বৈঠক হবে। আপাতত মাইকে ঘোষণার পাশাপাশি হোর্ডিং, ফ্লেক্স, ব্যানারের মাধ্যমেও সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে।
যদিও বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, সহনাগরিকদের অনেকেরই হুঁশ ফিরছে না। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিক, যেমন কলকাতা পুলিশ নিয়েছে। কলকাতায় কোভিড-বিধি না মানার অভিযোগে গ্রেফতারির ঘটনাও ঘটেছে। বাসিন্দাদের অনেকেরই আবার বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লাগাতার জনসভা ও মিছিল হয়েছে। কোনও রকম করোনা-বিধি মানা হয়নি। সেই সময়ে প্রশাসন পদক্ষেপ করলে সংক্রমণ হয়তো এই হারে ছড়াত না।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা বাড়তে থাকায় ফের সেখানে সেফ হোম চালু করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত বছর করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে প্রশাসনের যে তৎপরতা দেখা গিয়েছিল, বর্তমানে ততটা দেখা যাচ্ছে না। এটা ঠিকই যে, সরকারি কর্তাদের অনেকেই এখন নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, নির্বাচন মিটতে মিটতে করোনা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই অবশ্য দাবি, তাঁরা সকলকেই সতর্ক করছেন। মাস্কও পরতে বলা হচ্ছে কর্মীদের। তবে প্রচারের ক্ষেত্রে সব সময়ে শারীরিক দূরত্ব যে বজায় থাকছে না, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁরা। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ থেকে ৮০-র মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। তার পরেই হঠাৎ করে তা বাড়তে থাকে। তবে আশার কথা, আক্রান্তদের অধিকাংশই উপসর্গহীন। তাঁরা বাড়িতেই রয়েছেন। তবে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করার কাজও শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কোনও এলাকায় সংক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটছে, এমনটা নয়। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকেই কমবেশি খবর আসছে। প্রতিষেধক দেওয়াও পাশাপাশি চালানো হচ্ছে।
নিউ টাউনেও করোনার প্রকোপ বেড়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে সেখানে। ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ) পুনরায় সেখানে সেফ হাউস চালু করতে চলেছে। নিউ টাউনের ১২ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে ওই সেফ হাউস চালু করা হবে। সেখানে মাইকিংয়ের পাশাপাশি ফ্লেক্স-ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে।