ফাইল চিত্র।
ভাঁড়ার নিঃশেষিত, তাই পরপর দু’দিন কোভিশিল্ড দেওয়া বন্ধ রইল কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যার জেরে দুর্ভোগে পড়লেন প্রতিষেধক নিতে আসা বহু নাগরিক, বিশেষ করে যাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, প্রতিষেধকের জোগান যে দিন ফের আসবে, তার পরের দিন থেকেই তা দেওয়া শুরু হবে।
ভাঁড়ার খালি হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতা পুরসভার কর্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন, শুক্রবার থেকে আর কোভিশিল্ড দেওয়া সম্ভব হবে না। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছিল, বৃহস্পতিবার রাতে বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোরে মেরেকেটে ৭০ হাজার ডোজ় কোভিশিল্ড পড়ে ছিল। তাই নতুন করে প্রতিষেধক না-আসা পর্যন্ত তা কাউকেই দেওয়া যাবে না। শনিবার দুপুরে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কোভিশিল্ড এখনও পাইনি। আজ রাতে পেলে সোমবার থেকে ফের তা দেওয়া হবে। আর সোমবার পেলে মঙ্গলবার থেকে দেওয়া শুরু করব।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ২৪০ ডোজ় কোভিশিল্ড এসেছে রাজ্যে। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে যেমন রিকুইজ়িশন পাঠানো হবে, সেই অনুযায়ী প্রতিষেধকের বণ্টন করা হবে।” তবে কলকাতার আশপাশের জেলাগুলিতে কোভিশিল্ডের ভাঁড়ার একেবারে ফাঁকা হয়ে যায়নি। এ দিন ফিরহাদ জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে কোভিশিল্ডের চাহিদা বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় ওই প্রতিষেধকের প্রায় এক লক্ষ দ্বিতীয় ডোজ় বাকি রয়েছে। তাই কোভিশিল্ড সংখ্যায় কম এলে দ্বিতীয় ডোজ়কেই আপাতত প্রাধান্য দেওয়া হবে। তবে বেশি মিললে প্রথম ও দ্বিতীয়, দুটো ডোজ়ই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
শেষ এক সপ্তাহে বেশ কয়েক দিন রাজ্যে প্রতিষেধক প্রদানের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল চার লক্ষের ঘরে। রাজ্যের তরফে বার বারই দাবি করা হয়, দিনে চার লক্ষ তো বটেই, তার চেয়েও বেশি সংখ্যক প্রতিষেধক দেওয়ার মতো পরিকাঠামো এখানে রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে পর্যাপ্ত জোগান না আসান এত জনকে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হয় না। একই ভাবে কলকাতা পুরসভার কর্তারাও জানিয়েছেন, দৈনিক এক লক্ষ প্রতিষেধক দেওয়ার পরিকাঠামো থাকলেও উপায় নেই। ফিরহাদ জানান, শহরবাসীর বেশির ভাগই প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। তবে শহরতলি বা পাশের জেলা থেকে বহু মানুষ রোজ কলকাতায় প্রতিষেধক নিতে আসছেন। সেই কারণেই প্রতিষেধকের চাহিদা বাড়ছে।
ফিরহাদ আরও জানিয়েছেন, ভিড় এড়াতে ‘বাফার স্টক’ হিসেবে এক লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক পাওয়ার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিষেধকের সঙ্কটের কারণে তা সম্ভবপর হচ্ছে না। তবে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কোভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে।