Coronavirus in Kolkata

Covid19: সংক্রমিতের নিরিখে দশের দোসর চার বরো নিয়েই দুশ্চিন্তা

করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো সর্বাধিক চিন্তার কারণ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৪০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বড়দিন আর বর্ষবরণে বাঁধভাঙা হুল্লোড়ের মাসুল দিতেই হচ্ছে নগরবাসীকে! আপাতত সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে উত্তরকে টেক্কা দিচ্ছে দক্ষিণ। তবে সেই পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে বদলে যেতে পারে বলে মত চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুর আধিকারিকদের।

Advertisement

করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো সর্বাধিক চিন্তার কারণ ছিল। গত চোদ্দো দিনেই ওই বরোয় আক্রান্তের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার মুহূর্তে তার দোসর হয়েছে সাত, আট এবং ন’নম্বর বরো। তবে ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারির পরিসংখ্যান বলছে, সবাইকে পিছনে ফেলে এগিয়ে রয়েছে আট নম্বর বরো। পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, মানছেন পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘সাত থেকে দশ নম্বর বরো এলাকায় যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সেটা তো চিন্তার বিষয়ই। পর্যালোচনা চলছে।’’

২৫ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটে করোনা বিধিভঙ্গের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। বরো সাতের অন্তর্গত ওই এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৭৫। পরের দিন তা বেড়ে হয় ২৯৭। এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সাত নম্বর বরোর অধীনস্থ পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট-সহ সাতটি এলাকায় করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি। যার জন্য ওই সাতটি রাস্তার একাংশকে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জ়োন করার প্রস্তাব রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়েও এই সমস্ত এলাকায় সংক্রমণের এতটা প্রকোপ ছিল না।’’

Advertisement

পুর স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ন’নম্বর বরোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০৩। ১ জানুয়ারি তা হয়েছে ২৪৯। ওই বরোর ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডটি আলিপুরকে কেন্দ্র করে। সেই ওয়ার্ডে করোনা
আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে বলে খবর। আলিপুর পার্ক প্লেস, আলিপুর রোড, অশোকা রোডে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। গত তিন দিনে ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে ৪০, ৮০ এবং ১০০ জন। ন’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে ঠিকই। পাশাপাশি এখানে পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে পুরসভা মাইকে প্রচার করছে। বিভিন্ন বাজারে করোনা পরীক্ষার কথাও বলা হয়েছে।’’

অতিমারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে কলকাতায় শীর্ষে থাকা দশ নম্বর বরোয় ৩১ এবং ১ তারিখে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২৯৮ ও ৩২৩। ওই বরোর অধীন ৮১ নম্বর ওয়ার্ডেই ওই দু’দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৫ এবং ৬১। ৮১ নম্বর ওয়ার্ডটি মূলত নিউ আলিপুরের এলাকাধীন। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘৭৪ এবং ৮১ নম্বর ওয়ার্ড, অর্থাৎ আলিপুর ও নিউ আলিপুর এলাকায় সংক্রমণ ভীষণ ছড়িয়েছে। এখানে সংক্রমিতদের বেশির ভাগই বহুতল এবং আবাসনের বাসিন্দা। প্রত্যেক আবাসন কমিটিকে কঠোর ভাবে করোনা-বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

তবে ৩১ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী অনেকটা এগিয়ে আছে আট নম্বর বরো এলাকা। সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৭২ এবং ৪৩৮। আট নম্বর বরোর বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স, পণ্ডিতিয়া রোড, সতীশ মুখার্জি রোডে সংক্রমিতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

উত্তরে অন্যান্য বরোর তুলনায় তিন নম্বরে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলে পুরসভার ইঙ্গিত। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘যে বাড়ি বা আবাসনে সংক্রমণ হচ্ছে, সেখানে আমরা জীবাণুনাশের ব্যবস্থা করছি। সবাইকে মাস্ক পরতে অনুরোধ করছি। যে আবাসনে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, সেখানকার লিফটও জীবাণুমুক্ত করা বাধ্যতামূলক হয়েছে। তবে প্রশাসন যতই ব্যবস্থা নিক, সবার আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে। না হলে কোনও প্রচেষ্টাই সফল হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement