প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন, এই সন্দেহে গত দু’দিন ধরে এক যুবককে থাকতে হল পুরসভার তৈরি শিশু উদ্যানে। সেখানেই খোলা আকাশের নীচে পৌঁছে দেওয়া হল তাঁর চার বেলার খাবার এবং স্নানের জল। বাড়িতে গেলে অন্যদের বিপদ বাড়তে পারে ভেবে তিনিই ওই যুবককে শিশু উদ্যানে থাকতে বলেন বলে বুধবার দাবি করলেন কলকাতা পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহন গুপ্ত।
যদিও স্রেফ সন্দেহের বশে এ ভাবে কাউকে বাড়ির বাইরে রাখা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। চিকিৎসকদের বড় অংশই বলছেন, এ ভাবে খোলা আকাশের নীচে থাকাটা একেবারেই নিরাপদ নয়। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন মনে করা হলে পাঁচ দিনের মধ্যে তাঁর পরীক্ষা হবে। এই সময়টায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের বাড়িতেই কোয়রান্টিনে থাকার কথা।’’
কাউন্সিলর মোহনবাবু অবশ্য দাবি করলেন, ওই যুবক তাঁর এলাকার যে জায়গায় থাকেন, সেটি বস্তি অঞ্চল। একটিমাত্র ঘরে দাদা, বৌদি ও ভাইঝির সঙ্গে থাকেন ওই যুবক। এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে ফিরলে ঝুঁকি আরও বাড়ত। তিনি জানান, উত্তর কলকাতার একটি প্যাথলজি কেন্দ্রে কাজ করেন ওই যুবক। দিন কয়েক আগে সেখানে এক মহিলা পরীক্ষা করাতে যান। তাঁর কথায়, ‘‘গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নাকি ওই প্যাথলজি কেন্দ্রে ফোন করে জানানো হয়, সেই মহিলার রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজ়িটিভ এসেছে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। প্যাথলজি কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক কর্মীকে দ্রুত হোম কোয়রান্টিনেও যেতে বলা হয়।’’
কাউন্সিলরের দাবি, বাড়ি ফেরার পথে ওই যুবক তাঁকে ফোন করলে তিনি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলেন। সেখানে চিকিৎসকেরা পরীক্ষার পরে জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ এখনও ওই যুবকের মধ্যে নেই। তিনি হোম কোয়রান্টিনে থাকুন। কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘সমস্যা বুঝে এর পরে আমাদের পুরসভার উদ্যানে ওঁর থাকার ব্যবস্থা করি। কোনও সরকারি জায়গায় যদি ওঁকে রাখা যায়, ভাল হয়। চেষ্টা করছি।’’
ওই যুবকের পরিবারের কেউই প্রথমে এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। পরে তাঁর দাদা বলেন, ‘‘ভাই বাড়িতে ফিরলে সত্যিই সমস্যা হত। পার্কে থাকতে তো সমস্যা নেই!’’