কাজ শুরুর আগে বাসকর্মীদের হাতে স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার, ধূলাগড়ে। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের ভয়ে যাত্রী কমছে গণ পরিবহণে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি বাস, ট্রাম ও লঞ্চে যাত্রীদের আতঙ্ক কমাতে বিশেষ পদক্ষেপ করছে রাজ্য পরিবহণ নিগম।
মঙ্গলবার থেকে রাজ্য পরিবহণ নিগমের সব ক’টি টার্মিনাস ছাড়াও এসি এবং নন-এসি বাসে যাত্রীদের হাত পরিষ্কার করার জন্য স্যানিটাইজ়ার দেওয়া শুরু হয়েছে। সকালের দিকে বিমানবন্দরের টার্মিনাল থেকে চলা সাতটি ভলভো বাসের রুটে এই উদ্যোগ প্রথম দেখা যায়। চালক এবং কন্ডাক্টরেরা বাসে ওঠার আগে দায়িত্ব নিয়ে প্রত্যেক যাত্রীর হাত স্যানিটাইজ়ার দিয়ে পরিষ্কার করানোর ব্যবস্থা করেন। পরে সমস্ত এসি বাস, ট্রাম এবং লঞ্চের যাত্রীদেরও স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
রাজ্য পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, প্রতিদিন কলকাতায় প্রায় ছ’লক্ষ যাত্রী সরকারি বাসে যাতায়াত করেন। এর মধ্যে নিগমের আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশই আসে এসি বাস থেকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পাঁচ নম্বর সেক্টরের একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা তাদের কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে। যার জেরে সল্টলেকের ওই এলাকায় মানুষের আনাগোনা অনেক কমে গিয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই কমেছে এসি বাসের যাত্রীও। আগামী কয়েক দিনে যাত্রী আরও কমতে পারে বলে আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা।
পরিস্থিতি সামলাতে স্বাস্থ্য-বিধি মানার ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে রাজ্য পরিবহণ নিগম। প্রতিটি ডিপোয় বাসগুলিকে ভাল ভাবে পরিষ্কার করা ছাড়াও সমস্ত বাসে স্যানিটাইজ়ার রাখা সেই পরিকল্পনার অঙ্গ। এ ছাড়াও, যাত্রীদের সচেতন করতে প্রতিটি টার্মিনাসে এবং এসি বাসে বিশেষ অডিয়ো-বার্তা বাজানোর কাজও শুরু হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লঞ্চগুলি ধোয়ার কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। দিনে প্রায় দু’লক্ষ যাত্রী লঞ্চে যাতায়াত করেন। সেই যাত্রীদের সুরক্ষায় এ দিন সকাল থেকেই দু’টি ব্যস্ততম জেটি, হাওড়া এবং মিলেনিয়াম পার্কে যাত্রীদের স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। খিদিরপুর, শ্যামবাজার, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ রুটের ট্রামেও যাত্রীদের স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে।
বাসে যাত্রীদের ভিড় কমাতে শহরের ৩১টি রুটকে চিহ্নিত করে ওই সব রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ নিগম। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিংহ কপূর বলেন, ‘‘আমরা চাই, যাত্রীরা সর্বতো ভাবে সচেতন হয়ে নিরাপদে যাতায়াত করুন।’’
বেসরকারি বাস-মিনিবাসে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করতে সোমবার বেলতলা মোটর ভেহিক্লস দফতরে বাস-মিনিবাস সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয় প্রশাসনিক কর্তাদের। সেখানে তাঁদের বাসকর্মী এবং যাত্রীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। করোনার আশঙ্কায় মেট্রোতেও গত দু’দিনে যাত্রী-সংখ্যা লাখখানেক কমেছে বলে খবর।