ফাইল চিত্র।
করোনা-সতর্কতায় মঙ্গলবার থেকে শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে মামলার শুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সংক্রমণ এড়াতে রাজ্য বার কাউন্সিল সবক’টি আদালতে আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার সর্বসম্মত প্রস্তাব নেওয়ায় এ দিন হাইকোর্টে কোনও মামলারই শুনানি হল না। রাজ্যের বাকি আদালতের আইনজীবীরাও বার কাউন্সিলের প্রস্তাব মেনে এ দিন কাজে যোগ দেননি। জনসমাগম এড়াতে মামলাকারীদেরও কাউকে এ দিন আদালতকক্ষে ঢুকতে দেখা যায়নি।
তবে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ অধিকাংশ বিচারপতি এ দিন আদালতে এসেছিলেন এবং এজলাসে বসেন। জরুরি তালিকায় থাকা বেশ কিছু মামলার ডাকও হয়। কিছু মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। তবে হাইকোর্ট প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন কোনও মামলার শুনানি হয়নি। আইনজীবীদের একাংশ হাইকোর্টে এলেও বিচার প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
করোনা ঠেকাতে এ দিন আদালতে আসা সকলেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হাজির ছিলেন হাইকোর্টের মেডিক্যাল ইউনিটের চিকিৎসকেরা। কোনও বিচারপতি, আইনজীবী বা বিচারপ্রার্থীদের
কেউ করোনার উপসর্গ নিয়ে আদালতে ঢুকছেন কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য ‘থার্মাল গান’ নিয়ে এ দিন এ, বি এবং ই গেটে হাজির ছিলেন তাঁরা। সার্ধশতবর্ষ ভবনেও ছিলেন তাঁরা। বিচারপতি থেকে আদালতের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী, ল ক্লার্ক থেকে হাইকোর্টের কর্মী— সকলেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন তাঁরা।
ওই ইউনিট সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া তিনটি ‘থার্মাল গান’-এর মধ্যে কাজ করেছে দু’টি। ওই থার্মাল গান চিনের তৈরি বলেও ইউনিট সূত্রের খবর। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এ দিন হাইকোর্টে প্রায় ৩০০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। তবে শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে, এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ দিন ব্যাঙ্কশাল, শিয়ালদহ, আলিপুর আদালতের লক-আপেও মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা রেখেছিল পুলিশ প্রশাসন। এক পুলিশ কর্তা জানান, অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করানোর আগে সরকারি হাসপাতালে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। সেই নিয়ম মানার পাশাপাশি, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে লক-আপে রাখা হয়েছিল মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার।
বার কাউন্সিল সূত্রের খবর, যে সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোর্টে তোলার কথা এবং যে সব অভিযুক্তকে জেল হেফাজত থেকে এ দিন আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল— তাদের মামলাগুলির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে রাজ্যের সব আদালতে। অন্য কোনও মামলার শুনানি হয়নি। কাউন্সিলের পক্ষে প্রসূন দত্ত জানান, বিচারপতি, বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী সকলেই যাতে সংক্রমণ এড়াতে পারেন, সেই কথা ভেবে আগামী কয়েক দিন বিচারপ্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।