সাফসুতরো: ধোয়া হচ্ছে মেট্রোর টোকেন। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় মেট্রোর কামরা এবং স্টেশন পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ আগেই জারি হয়েছিল। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে যাত্রীদের টোকেনও প্রত্যেক বার ব্যবহারের আগে ভাল ভাবে ধোয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জারি করা সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যাত্রীদের হাত ঘুরে আসা টোকেন প্রতিবার ব্যবহারের আগে সাবান-জল ও জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ভাল করে শুকিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এ দিন মেট্রো ভবনের নির্দেশ পাওয়ার পরে দুপুর থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে ওই কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যায়।
মেট্রো সূত্রের খবর, ট্রেনের কামরার মেঝে, যাত্রীদের বসার আসন, হাতল, স্টেশন চত্বর জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হলেও টোকেন থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছিল। সারা দিনে মেট্রোয় কমবেশি ছ’লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। তাঁদের প্রায় ৫০ শতাংশ যাত্রী স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেন। বাকিরা টোকেন কিনে যাতায়াত করেন। হাতবদল হওয়ার সময়ে টোকেন থেকে সংক্রমণ ছড়ানো রুখতেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই নির্দেশ জারি করেছেন বলে খবর।
উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় টোকেন ব্যবহারকারী তিন লক্ষ যাত্রীর জন্য সব ক’টি স্টেশন মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টোকেন লাগে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় করোনা-আতঙ্কে যাত্রী কমে আসার পরে এখন দিনে হাজার দেড়েকের মতো টোকেন লাগে। এক-একটি টোকেন দিনে প্রায় চার বার ব্যবহার হয়। বারবার হাতবদল হওয়া প্লাস্টিকের টোকেন থেকে সাধারণ যাত্রী বা মেট্রোকর্মী, যে কেউ সংক্রমিত হতে পারেন। এই আশঙ্কা গত কয়েক দিন ধরেই মেট্রো ভবনের আধিকারিকদের মাথায় ঘুরছিল। যাত্রীদের একাংশও এমন আশঙ্কা থেকে মেট্রোযাত্রা
এড়িয়ে চলছিলেন।
গত কয়েক দিনে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় গড়ে প্রায় দেড় লক্ষ যাত্রী কমেছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় দিন প্রতি যাত্রী কমেছে হাজার তিনেক। স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকারী মেট্রোযাত্রীদের সংখ্যা সে ভাবে না কমলেও টোকেন ব্যবহারকারী যাত্রীদের সংখ্যায় ভাটার টান চোখে পড়ছিল। মেট্রো আধিকারিকদের মতে, স্কুলে ছুটি পড়ায় পড়ুয়া-সহ অভিভাবকদের একটি অংশের যাতায়াত কমেছে। পাশাপাশি বয়স্ক যাত্রীদের একাংশ পথঘাট এড়িয়ে চলছেন। তবে যাত্রী-সংখ্যা কমার জন্যই কি টোকেন ধোয়ার নির্দেশ? এ কথা মানতে রাজি নন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বারবার ব্যবহার করা টোকেন থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছিল। সেই কারণেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
মেট্রো সূত্রের খবর, স্টেশন সুপারদের ঘরে প্লাস্টিকের বালতিতে সাবান-জল এবং জীবাণুনাশক দিয়ে ধোয়া হচ্ছে টোকেন। তার পরে তা মুছে, ভাল করে শুকিয়ে ফের ব্যবহারের জন্য কাউন্টারে পাঠানো হচ্ছে।