ফাইল চিত্র।
ইংল্যান্ড থেকে ফেরা এক তরুণের দেহে করোনাভাইরাস মিলল। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
কলকাতার বাসিন্দা ওই তরুণ পড়াশোনা সূত্রে ইংল্যান্ডে ছিলেন। গত ১৫ মার্চ সেখান থেকে বাড়িতে ফেরেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দমদম বিমানবন্দরে তরুণের থার্মাল স্ক্রিনিং হয়। কিন্তু সে সময় করোনার কোনও উপসর্গ ধরা পড়েনি তাঁর দেহে।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আক্রান্ত ছাত্রের মা নবান্নের এক পদস্থ কর্তা। যেহেতু ওই তরুণ ইংল্যান্ড থেকে ফিরেছেন নিয়মমাফিক তাঁকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সূত্রের খবর, তিনি বা তাঁর পরিবার সেই নির্দেশ মানেননি। গত রবিবার এই তরুণ জানতে পারেন, সম্প্রতি ইংল্যান্ডে তিনি যে পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন সেই পার্টিতে উপস্থিত বেশ কয়েক জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে তাঁর বান্ধবীও রয়েছেন। পরিবারকে বিষয়টি জানান ওই তরুণ। তখন তাঁরা স্বাস্থ্যভবনে যোগাযোগ করেন। তার মধ্যেই ধীরে ধীরে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয় ওই তরুণের। সোমবার সেই উপসর্গ প্রকট হয়। তার পরেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন পদস্থ কর্তারা। মঙ্গলবার তাঁর শারীরিক পরীক্ষা হলে রিপোর্টে পজিটিভ ধরা পড়ে।
স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, প্রথম দিকে ওই তরুণের পরিবারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা মেলেনি। ফলে গত তিন দিনে ওই তরুণের সরাসরি সংস্পর্শে কারা এসেছেন, এই মুহূর্তে তাঁদের খুঁজে বার করতে হচ্ছে। এটাই এখন বেশি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছে।প্রাথমিক ভাবে ওই তরুণের বাবা-মা এবং তাঁদের পরিবারিক গাড়ির চালককে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: মহামারি আইন চালু হল বাংলাতেও
আরও পড়ুন: ‘আগামী ছ’মাসেই আর্থিক বিপর্যয় দেখবে দেশ’, করোনা নিয়ে সতর্ক করলেন রাহুল গাঁধী
কলকাতার একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা এই তরুণ। স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের দাবি, ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর তিনি একাধিক বন্ধু, প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। করোনা প্রতিরোধের প্রাথমিক নিয়ম অনুসারে তাঁদের প্রত্যেককে গৃহ-পর্যেবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য কর্তারা সেই তালিকা তৈরি করতে ব্যস্ত। এবং সেই তালিকা যে দীর্ঘ তা স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের এক পদস্থ আধিকারিক।
এই প্রাথমিক তালিকার বাইরেও থেকে যাচ্ছে দ্বিতীয় তালিকা। অর্থাৎ যাঁরা সরাসরি ওই তরুণের সংস্পর্শে আসেননি, কিন্তু ওই তরুণের কাছে থাকা ব্যক্তিদের সংস্পর্শে কারা এসেছেন সেটাই খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। এই দ্বিতীয় তালিকাটাই এই মুহূর্তে সব থেকে উদ্বেগে রেখেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের।
স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের ইঙ্গিত, ওই তরুণ আর একটু দায়িত্বশীল হলেই প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সংক্রমণের আশঙ্কাটা অনেকটা কমে যেত। তবে তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল টিমের এক সদস্যের বক্তব্য, তরুণের দেহে সংক্রমণ প্রাথমিক পর্যায়ে। ফলে তা ছড়ানোর সম্ভাবনাও তুলনামূলক ভাবে কম।