শিশুদের জন্য প্রস্তুতি তুঙ্গে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ এলে বেশি সংখ্যক শিশু আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই মতো সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা নিয়ে সতর্ক বেসরকারি হাসপাতালগুলিও। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে বেশি শিশুর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় হাসপাতালের পরিকাঠামো বাড়ানো এবং কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ এর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গত দেড় দু’বছরের করোনা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে চিকিৎসকদের। কিন্তু শিশুদের চিকিৎসা পদ্ধতি বা পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সংবেদনশীল ও সজাগ থাকার প্রয়োজন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
রাজ্যে করোনা আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়লে বেড সংখ্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা রাখছে সব হাসপাতালই। শিশুদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সের ঘাটতি মেটাতে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মেডিকা হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও এমডি চিকিৎসক আলোক রায় জানান, ‘‘চিকিৎসক, নার্সদের প্রশিক্ষণ চলছে। এ ছাড়াও গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জন্য ২৫টি ভেন্টিলেটর এবং ১৫টি বাইপ্যাপ ও কেনা হয়েছে।’’
তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় অগস্ট মাসের মধ্যে করোনা মোকাবিলার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে আমরি হাসপাতাল। মুকুন্দপুর এবং সল্টলেক আমরি হাসপাতালের একটি করে তল শিশু চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে ৩০টি বেড রয়েছে শিশু চিকিৎসায়। নিকু এবং পিকু পরিষেবা-সহ ১০০টি বেড পর্যন্ত বাড়াতে প্রস্তুত এই হাসপাতাল। আমরি হাসপাতালের সিইও রূপক বড়ুয়া জানান, ‘‘করোনার তৃতীয় ঢেউ সামলাতে এবং শিশুদের চিকিৎসায় প্রস্তুত আমরা। আমরির সব ইউনিটকেই শিশুদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্য ভেন্টিলেটর, হিউমিডিফায়ার রয়েছে। দরকারে বড়দের ভেন্টিলেটর যাতে শিশুদের ব্যবহারযোগ্য করা যায় তার জন্য ভেন্টিলেটর নির্মাতাদের সঙ্গে কথা চলছে।’’
শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানান শিশুদের কথা মাথায় রেখে ল্যাবরেটারি পরিকাঠামোয় নজর দিয়েছে পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ। আইএলএস হাসপাতালের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট দেবাশিষ ধর জানান, ‘‘জরুরি বিভাগ থেকে ইনডোর পরিষেবা প্রতিটি ধাপেই শিশুদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিশুদের জন্য কোভিড এবং নন কোভিড ওয়ার্ড চিহ্নিত করা হয়েছে। চিকিৎসক-সহ একাধিক বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলছে। পাশাপাশি শিশুদের করোনা চিকিৎসায় বেড থেকে ভেন্টিলেটর কেনার জন্য ডিলারদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’’
বড়দের থেকে শিশুদের বিভিন্ন শারীরিক মাত্রা আলাদা। ওষুধের ক্ষেত্রেও শিশুর ওজন অনুয়ায়ী রদবদল হয়। শিশু চিকিৎসকের পাশিপাশি নার্সদেরও ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশু বিভাগ ছাড়াও হাসপাতালের অন্য বিভাগের নার্স এবং জুনিয়র চিকিৎসকদেরও যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায় সে জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলছে বলে জানান ফর্টিস হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক সুমিতা সাহা।