প্রতীকী ছবি
থানার ওসি-সহ ১৮ জন করোনায় আক্রান্ত। এর সঙ্গে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। আর এর জেরেই প্রতিদিনের কাজে কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটছে হরিদেবপুর থানায়। সাড়ে ২৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ওই থানার কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখতে লালবাজার থেকে অতিরিক্ত অফিসার এবং পুলিশকর্মী পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হরিদেবপুর থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর তুষারকান্তি কুলের মৃত্যু হয়। তার পরেই জানা যায়, থানার ওসি দেবাশিস চক্রবর্তীও করোনায় আক্রান্ত। ওসির পরিবারের দুই সদস্যও সংক্রমিত। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওসি ছাড়াও বর্তমানে করোনার কারণে থানায় অনুপস্থিত পুলিশকর্মীর সংখ্যা ১৭। তাঁদের অনেকেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও চিকিৎসকদের কাছ থেকে কাজে যোগদানের অনুমতি পাননি। ফলে অফিসার থেকে নিচুতলার পুলিশকর্মী, সব বিভাগেই কম লোক রয়েছে হরিদেবপুর থানায়। তাই থানায় সুস্থ থাকা পুলিশকর্মীদের অতিরিক্ত সময় দিতে হচ্ছে অবস্থা স্বাভাবিক রাখার জন্য।
সূত্রের খবর, এক জন অফিসারের সঙ্গে বেশ কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ওই থানায় পাঠানো হয়েছে। ওই থানা এলাকায় রয়েছে মাছ এবং আনাজের দু’টি পাইকারি বাজার। পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম থাকায় সেগুলির উপরে নজরদারির কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে খবর।
লালবাজার জানিয়েছে, আপাতত ওই থানায় আসার উদ্দেশ্য জেনেই লোকজনকে ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র এক জন করেই থানায় ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন। সংক্রমণ ঠেকাতে ওই থানার মেস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি থেকে যাতায়াতের সুবিধে রয়েছে, এমন পুলিশকর্মীদের থানায় আসার বদলে সোজা কর্মস্থলে যেতে এবং কাজ শেষে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে। শুধুমাত্র দূরে যাঁদের বাড়ি, থানার ব্যারাকে তেমন পুলিশকর্মীদেরই থাকতে দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, লকডাউন উঠে যেতেই শহরে রাজনৈতিক সভা, বিক্ষোভ সমাবেশের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে অপরাধের সংখ্যাও। তাঁদের দাবি, রাজনৈতিক কর্মী হোক বা দুষ্কৃতী, কেউই করোনা-বিধি মেনে চলেন না। সভা কিংবা মিছিলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয় না। তাই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে গিয়ে তাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন বলেই পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি।
লালবাজারের হিসেব অনুযায়ী কলকাতা পুলিশের প্রায় ২৪৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মে মাস থেকে শ্যামপুকুর থানায় সব চেয়ে বেশি ৩৩ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিন জন বাদে সবাই সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন বলে লালবাজার জানিয়েছে।