প্রতীকী ছবি।
অতিমারির এই সঙ্কটকালে খুঁটিপুজোর মাধ্যমে কোভিড নিয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা শহরের বেশ কিছু ক্লাব। ওই সমস্ত ক্লাবের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এ বার খুঁটিপুজো হলেও তা হবে নমো নমো করে। আর সেই খুঁটিপুজোর মাধ্যমেই সচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে।
দমদম পার্কের একটি পুজোর কর্মকর্তা রবীন গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, করোনার বিরুদ্ধে একেবারে সামনের সারিতে যাঁরা লড়াই করছেন, এ বারের খুঁটিপুজোয় তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, অ্যাম্বুল্যান্স চালক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী— যাঁরা একেবারে সামনে থেকে করোনা আক্রান্তদের জন্য কাজ করছেন, ১৫ অগস্ট তাঁদের সংবর্ধনা দেব। ওঁরা করোনা নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেবেন এলাকার মানুষকে।’’
করোনায় আক্রান্তদের ব্রাত্য করে রাখা নয়, বরং বিধি মেনে তাঁদের পাশে থাকার বার্তাই দেবে ঠাকুরপুকুরের একটি পুজো কমিটি। কর্মকর্তা সঞ্জয় মণ্ডল জানিয়েছেন, ১৫ অগস্ট, খুঁটিপুজোর দিন তাঁদের সঙ্গে থাকবেন করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ কয়েক জন মানুষ। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা জানাবেন, পাড়ায় কারও করোনা হলে প্রতিবেশীদের পাশে থাকাটা কত জরুরি। এর পাশাপাশি ওই দিন পাড়ায় স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্কও বিতরণ করা হবে পুজো কমিটির তরফে।
আরও পড়ুন: মেট্রোর বিমানবন্দর স্টেশনের ছাদ ঢালাই
উত্তরের টালা এলাকার একটি পুজো এ বার ১০০ বছরে পা দিচ্ছে। ওই পুজো কমিটির তরফে অভিষেক ভট্টাচার্য জানালেন, শতবর্ষ উপলক্ষে অনেক পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সে সব কিছুই আর এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। তাই পরিকল্পনা পাল্টেছেন তাঁরা। খুঁটিপুজোও অন্যান্য বারের মতো করে হবে না। অভিষেকের কথায়, ‘‘আমাদের পুজোর এ বার শততম বছর। তাই পাড়ার খুব পুরনো বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা ৬০-৭০ বছর ধরে এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, সেই প্রবীণদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ওঁদের স্যানিটাইজ়ার ও মাস্কও দেওয়া হবে। সংক্রমণের আশঙ্কায় ওই প্রবীণেরা যদি খুঁটিপুজোর মাঠে আসতে না চান, তা হলে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সংবর্ধনা এবং মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার দিয়ে আসা হবে।’’
তেঘরিয়ার অর্জুনপুরের একটি ক্লাবে এ বার খুঁটিপুজো হবে ভার্চুয়াল, জানালেন কর্মকর্তা তমাল দত্ত। আর সেই ভার্চুয়াল খুঁটিপুজো জুড়ে থাকবে করোনা সচেতনতার বার্তা। তমালবাবু বললেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর পাশেই আছে আমাদের ক্লাব। সামাজিক কর্তব্য পালন করছেন সবাই। ভার্চুয়াল খুঁটিপুজোতেও আমরা সেই বার্তাই দেব।’’
কালীঘাট এলাকার একটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ আবার জানালেন, খুঁটিপুজো ও পুজোর জন্য যে বাজেট ধরা থাকে, তার বেশির ভাগটাই এ বার খরচ করা হচ্ছে করোনা রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দিতে এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে। ন্যূনতম রীতিনীতি মেনে যে খুঁটিপুজো হবে, তাতেও করোনা সচেতনতার বার্তাই দেওয়া হবে।