ঝুলন্ত দেহের ছবি পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে

অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, ‘অলিভার টুইস্ট’ গল্পে সাইক্‌স নামে ওই চরিত্রটির দুর্ঘটনাবশত গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর বর্ণনা পড়া ও ছবি দেখার পরে তাঁদের ছেলেমেয়েদের অনেকের মনেই বিভিন্ন প্রশ্ন জেগেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৫
Share:

এই ছবি ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

পরনে নীল প্যান্ট, হলুদ গেঞ্জি। একটি বহুতলের সিলিং থেকে গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছেন এক যুবক। গার্ডেন হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি গল্পের বই ‘অলিভার টুইস্টে’ এই ছবি ঘিরে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কোনও স্কুলের পাঠ্যবইয়ে এই ধরনের ছবি রাখার যুক্তি কী, সেই মৌলিক প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ থেকে শুরু করে মনোবিদেরা। তাঁদের আরও বক্তব্য, এমন একটি ছবি দেখে পড়ুয়াদের মনে মানসিক চাপ বাড়তে পারে, যা যথেষ্ট উদ্বেগের।

Advertisement

অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, ‘অলিভার টুইস্ট’ গল্পে সাইক্‌স নামে ওই চরিত্রটির দুর্ঘটনাবশত গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর বর্ণনা পড়া ও ছবি দেখার পরে তাঁদের ছেলেমেয়েদের অনেকের মনেই বিভিন্ন প্রশ্ন জেগেছে। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ছবিটা দেখে ছেলে জিজ্ঞাসা করেছে, মা, এ ভাবেই কি ফাঁসি দেওয়া হয়? ছবিটা না থাকলে বোধহয় এই প্রশ্নগুলো ওর মনে আসত না।’’ আর এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘আমার ছেলে তো জিজ্ঞাসা করেছে, গলায় ফাঁস দিলেই কি মানুষ মরে যায়?’’

মনোবিদ মোহিত রণদীপ বলছেন, ‘‘এই ধরনের ছবি ১০ বছরের একটি ছেলে বা মেয়ের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। অনেকে হয়তো খেলাচ্ছলে গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করতে পারে। যা থেকে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এমন ঘটনা আগে ঘটেছে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এই ধরনের ছবি শিশুদের পাঠ্যবইয়ে থাকবে কেন? অনেকে হয়তো গল্পের মতো করেই ছবিটি দেখবে। কিন্তু যে সব বাচ্চা মানসিক ভাবে দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ছবি প্রভাব ফেলতে পারে।’’

বিতর্কের প্রেক্ষিতে গার্ডেন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল রাজশ্রী বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। সমাধান হিসেবে কী করা যায়, আমরা দেখছি।’’

ওই স্কুলটি আইসিএসই বোর্ডের অধীনে। বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন বলেন, ‘‘বোর্ড শুধু পাঠ্যক্রম তৈরি করে। কিন্তু কী বই স্কুলে পড়ানো হবে, সেটা ঠিক হয় সংশ্লিষ্ট

স্কুলের তরফেই।’’

যাঁরা বইটির প্রকাশক, সেই সংস্থার তরফে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থা থেকে বহু বই প্রকাশিত হয়। ওই বইটিতে ঠিক কী রয়েছে, সেটা আমরা খোঁজ নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement