রবীন্দ্র সরোবরে ছট।—ফাইল চিত্র।
রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো হওয়ার ফলে জলের মান খারাপ হবে, এমনটাই আশঙ্কা করেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দাবি, জলের যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাতে জলের মানের তেমন তফাত ধরা পড়েনি। এটা কী করে সম্ভব হল, তা নিয়েই আপাতত ধোঁয়াশায় বিশেষজ্ঞ থেকে পরিবেশকর্মীদের একটি বড় অংশ। সরোবরের যেখানে দূষণ হয়েছে, সেখান থেকেই জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।
পর্ষদ সূত্রের খবর, ৩ নভেম্বর তারিখ বিকেলে, অর্থাৎ ছটপুজোর অব্যবহিত পরেই সরোবরের দু’টি জায়গা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ওই দু’টি নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, জলে বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন চাহিদা (বিওডি) যথাক্রমে প্রতি লিটারে ১.২৫ এবং ১.৯৫ মিলিগ্রাম। অথচ ছটপুজোর আগে, গত ১৬ অক্টোবর পর্ষদের সংগ্রহ করা নমুনায় বিওডি ছিল প্রতি লিটারে ২.৮ মিলিগ্রাম। এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘বিওডি,
দ্রবীভূত অক্সিজেন, মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া-সহ একাধিক বিষয়ের উপরে জলের মান নির্ভর করে। খারাপ জলে বিওডি-র পরিমাণ বেশি থাকে। ছটপুজোয় যে ফুল ও বর্জ্য পড়েছিল, তাতে জলের মান খারাপ হওয়ার কথা। সেখানে বিওডি-র পরিমাণ কমে যাওয়াটা আশ্চর্যজনক।’’
শুধু বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন চাহিদাই নয়, জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণও ১৬ অক্টোবরের রিপোর্টের মতো এক এসেছে। অক্টোবরের রিপোর্টে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল প্রতি লিটারে ৯.৩০ মিলিগ্রাম। ৩ নভেম্বরের রিপোর্টে দেখা
যাচ্ছে, দু’টি নমুনায় দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ প্রতি লিটারে যথাক্রমে ৯.৩০ ও ৯.২০ মিলিগ্রাম। পরিবেশকর্মী নব দত্ত বলছেন, ‘‘ছটপুজো হল, এত বর্জ্য পড়ল, তার পরেও দ্রবীভূত অক্সিজেন চাহিদা একই থেকে গেল! কী ভাবে জলের মান ভাল হয়ে গেল, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’
নতুন রিপোর্ট বলছে, পার্থক্য শুধু এসেছে মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যায়। আগের রিপোর্টে মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা যেখানে ছিল প্রতি মিলিলিটারে ১১০০ এমপিএন, সেখানে ছটপুজোর পরে দু’টি জায়গার মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩০০ ও ১৩০০ এমপিএন।