যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পিএইচ ডি কোর্সে ভর্তি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এক ছাত্রকে ভর্তি নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র, সাগির হুসেইন সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে একটি অডিয়ো ক্লিপ (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। তবে ছাত্রটি এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে করেননি বলেই খবর।
ওই অডিয়ো ক্লিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ইমনকল্যাণ লাহিড়ী এবং বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের কথোপকথন উঠে এসেছে। সেখানেও পার্থদা বলে এক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, যে ছাত্রটিকে নিয়ে বিতর্ক, তিনি এসএফআই সমর্থক। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পিএইচ ডি করার সুযোগ তিনি পাননি। পরে ইন্টারভিউ দিয়েই ‘স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ়’-এ তিনি সুযোগ পান বলে জানা গিয়েছে। সমাজমাধ্যমে অভিযোগকারী ছাত্র টিএমসিপি-র সমর্থক বলেই ক্যাম্পাসে পরিচিত। তাঁর অভিযোগ, পার্থপ্রতিম ওই ছাত্রটিকে ভর্তি নিতে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে পার্থপ্রতিম বুধবার বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে ক’দিন ধরেই দেখছি, একটি বিভাগ এবং পিএইচ ডি-তে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কার্যত গোটা বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আমার নাম করে এক ছাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন কিছু বলছেন।’’ তিনি জানান, অথচ এ নিয়ে কোনও অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়েনি। তিনি আরও বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ার ওই পোস্টে আমাকে দৈহিক হেনস্থা করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। কেউ প্রাণনাশেরও নিদান দিচ্ছেন। পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। প্রয়োজনে হুমকির বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হব।’’
সমাজমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ওই ছাত্রের বিভিন্ন পোস্ট সম্পর্কে চিরঞ্জীব বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আলপচারিতা। এতে প্রভাব খাটানোর কিছুই নেই। মাসকয়েক আগে যখন এই কথোপকথন হয়, তখন আমি শুধুই যাদবপুরের অধ্যাপক। এই ধরনের ব্যক্তিগত আক্রমণ দুর্ভাগ্যজনক। ব্যক্তিগত আলাপচারিতাকে ‘ভাইরাল’ করাটা ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। পুলিশকে জানাব।’’
ইমনকল্যাণ এ দিন বলেন, ‘‘অডিয়ো ক্লিপে যা শোনা যাচ্ছে, তা একটি অন্য বিষয়ের কথা। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার সঙ্গে কোনও যোগই নেই। সেই সময়ে আমি বিভাগীয় প্রধানও ছিলাম না। এ নিয়ে আর কথা বলব না।’’ এ দিন জুটার তরফে অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অভিযোগ না জানিয়ে সমাজমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মানহানি এবং শারীরিক নিগ্রহের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা হোক। অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে যে ছাত্রটি লিখেই চলেছেন, তিনি আদৌ কোনও অভিযোগ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।