বিপর্যয়ের পরে মাঝেরহাট সেতু। ফাইল চিত্র
পুলিশের নজরে এ বার মাঝেরহাট সেতু রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদারেরা।
লালবাজার সূত্রের খবর, মাঝেরহাট সেতু ভাঙার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বেশ কয়েক জন ঠিকাদারকে। কথা বলা হবে আরও কয়েক জন ঠিকাদারের সঙ্গে, যাঁরা বিভিন্ন সময়ে ওই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন।
গত সপ্তাহেই ওই সেতু ভাঙা নিয়ে প্রথম রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য ফরেন্সিক বিভাগ। কোনও নির্দিষ্ট কারণ রিপোর্টে না বলা হলেও রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি এবং দুর্ঘটনাকেই প্রাথমিক ভাবে দায়ী করা হয়েছে সেই
রিপোর্টে। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরেই ওই সেতুর দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের কাছে ওই ঠিকাদারদের নাম জানতে চাওয়া হয়। তার একাংশ ইতিমধ্যেই তদন্তকারী দলের হাতে এসেছে। গত পাঁচ বছরে কারা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন, তা জানতে চেয়েই বেশি জোক দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সে রকম কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সেতুর দেখভালের সঙ্গে যুক্ত সরকারি অফিসারদেরও। পুলিশ বলছে, গত পাঁচ বছরে কার নির্দেশে কী কী মেরামতি হয়েছে, তা জানা দরকার। সে কারণেই ওই ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলা হবে।
৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতু। তাতে মৃত্যু হয় তিন জনের, জখম হন ২৭ জন। এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মাঝেরহাট সেতুর কাছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর নির্মাণের দিকে আঙুল উঠেছিল সে সময়ে। ফলে ওই ওই মেট্রোর নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারকিদের কয়েক জনের সঙ্গেও কথা বলেছে তদন্তকারী দল।
লালবাজার সূত্রের খবর, কী ভাবে মেরামতি করা হয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জানতে চাওয়া হচ্ছে ঠিকাদারেদের কাছে। পাশাপাশি, মাঝেরহাট সেতুর উপরে পুরনো ট্রামলাইন ছিল। সেই ট্রামলাইন না তুলে তার উপরে কেন বারবার পিচ করা হয়েছে, তাও ঠিকাদারদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে ওই ট্রামলাইনের উপরে পিচ করার ফলে সেতুর ওজন বেড়ে গিয়েছে। যা সেতু ভাঙার কারণ হতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফরেন্সিকের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কারণটি প্রথম দফার রিপোর্টে বলা না হলেও ঠিক কারণ জানার জন্য ন্যাশনাল টেস্ট হাউস ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। চলতি মাসেই তাঁদের রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে আসার কথা।