—প্রতীকী চিত্র।
জঙ্গলে সাপের রাজত্ব। আর সেই জঙ্গল কেটেই নিউ টাউনে চলছে বড় বড় আবাসন-সহ একাধিক নির্মাণকাজ। যেখানে কর্মরত অসংখ্য শ্রমিক। সাপের কামড় থেকে বাঁচতে অনেক জায়গাতেই শ্রমিকদের গামবুট পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। নিউ টাউনে সাপের কামড়ে পর পর দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় ভয় পেয়ে গিয়েছেন বাসিন্দারা। অনেক আবাসনে সাপ ধরার সরঞ্জাম ও অ্যান্টি-ভেনামও রাখা হয়েছে।
নিউ টাউনের বিভিন্ন খোলা জায়গায় প্রতিদিন অসংখ্য শ্রমিক কাজ করেন ভিন্ন ভিন্ন নির্মাণ সংস্থার হয়ে। হেলমেট থেকে কোমরে বাঁধার দড়ি, অথবা রাতে রাস্তায় কাজ করার জন্য উজ্জ্বল পোশাকের মতো নানা জিনিসের প্রয়োজন হয় তাঁদের। পায়ের সুরক্ষার জন্য গামবুটও লাগে। তবে, এ বার নিউ টাউনে সাপের কামড়ে দু’জনের মৃত্যুর জেরে গামবুটের প্রয়োজনীয়তা অন্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। নিউ টাউন থানার পিছনে ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের উল্টো দিকে একটি নির্মীয়মাণ আবাসনে ঢুকে দেখা গেল, জঙ্গলের মধ্যেই ঢালাইয়ের কাজ চলছে। সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনার কথা শুনেছি। এমনিতেই শ্রমিকদের গামবুট পরতে বলা হয়। সাপের কামড়ের আশঙ্কাটা নতুন সংযোজন। শ্রমিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জঙ্গলে গামবুট সব সময়ে পরতে।’’ ওই নির্মাণস্থলেরই নিরাপত্তাকর্মীর দাবি, সেখানে চন্দ্রবোড়া হামেশাই দেখা যায়। এলাকার চায়ের দোকানি গৌর মণ্ডল বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের গ্রামেরই এক জন নিউ টাউন থানার পিছনে জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ করতে গিয়ে সাপের কামড়ে মারা যান। এখানে এত নির্মাণকাজ হয়। বালির সঙ্গে লরিতে করেই চন্দ্রবোড়া নিউ টাউনে এসেছে অনেক বছর আগে।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য অনন্ত রায় নিউ টাউনে সাপ ধরার কাজে যুক্ত। তিনিও জানালেন, বাইরে থেকে বালি-পাথরের সঙ্গেই নিউ টাউনে চন্দ্রবোড়ার আসার কথা। তিনি বলেন, ‘‘ওই চা বিক্রেতা ঠিকই বলেছেন। বছর চারেক আগে নিউ টাউনে অজগরও পেয়েছি। বালি-পাথরের গাড়িতে চেপে বহু প্রজাতির সাপ এই শহরে এসেছে। তার পরে বংশবিস্তার ঘটিয়েছে।’’ নিউ টাউনের এক বহুতল থেকে শনিবারও একটি চন্দ্রবোড়া ও একটি কেউটে সাপ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। আর একটি নির্মাণস্থলের কর্মীরা জানালেন, প্রশাসনের তরফেও শ্রমিকদের গামবুট পরতে বলা হচ্ছে। নির্মাণস্থলে ব্লিচিং ছড়াতেও বলা হয়েছে।
এনকেডিএ-র এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি, জঙ্গল কাটার সময়ে গামবুট পরতে। ওঁরা সাপ নিয়ে সচেতন করতে অনেক জায়গায় যাচ্ছেন। সেখানে নির্মাণ শ্রমিকদেরও গামবুট পরতে বলা হচ্ছে।’’ আধিকারিকদের মতে, যে সব অ্যাকশন এরিয়ায় জঙ্গল বেশি, সেই সব জায়গাতেই সাপের উপদ্রব রয়েছে। নিউ টাউন চিড়িয়াখানায় সাপ ধরতে একটি দল সব সময়ে তৈরি থাকছে।