—প্রতীকী চিত্র।
ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের মোকাবিলায় এ বার যুদ্ধকালীন তৎপরতার ঘোষণা করল কলকাতা পুরসভা। শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবার জারি করা হয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশিকাও। সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ফুলহাতা জামা এবং ফুল ট্রাউজার্স-সহ শরীর ঢাকা জামাকাপড় পরার বার্তা দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। পাশাপাশি, প্রতিটি স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিনিয়ত ফুলের বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, জল জমতে না দেওয়া এবং কোনও ভাবেই যাতে মশার লার্ভা না-জন্মাতে পারে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার। এই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বসে কলকাতা পুরসভায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ স্বরূপ নিগম-সহ একাধিক স্বাস্থ্যকর্তার পাশাপাশি এই বৈঠকে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পারিষদ অতীন ঘোষ, পুর কমিশনার বিনোদ কুমার, পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সুব্রত রায়চৌধুরী-সহ পুর স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বর্ষার শুরু থেকেই শহরে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া-সহ মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তার জেরে ইতিমধ্যেই বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলার লক্ষ্যেই হয় মঙ্গলের বৈঠক। বৈঠকের শেষে অতীন জানান, ডেঙ্গি ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন আবাসন, অফিস। যেখানে সহজে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী থেকে শুরু করে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ দফতরের কর্মীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য ঢুকতে পারেন না। অন্য দিকে, শহর জুড়ে একাধিক পুকুর রয়েছে যার মধ্যে অনেকগুলি অপরিষ্কার হয়ে থাকার কারণে সেই সমস্ত স্থানে মশার লার্ভা জন্মাতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার অ্যাডেড (সংযোজিত) এলাকায় জলাভূমির অনেকাংশে মশার লার্ভা জন্মাতে মুক্ত পরিবেশের সৃষ্টি করছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের সচিব স্তরে কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি এজেন্সির দফতর ও আবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’’
যদিও গত বছরের তুলনায় এ বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ কিছুটা কম। অতীন জানান, আগামী দিনে জল জমা বন্ধ করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা নিয়ে ব্যাপক প্রচার অভিযান চালানো হবে। অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের পক্ষ থেকেও প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজের পরিসরও বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্ কর্মীদের ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে কোনও ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা খুঁজে বের করে দ্রুত তাঁর রক্ত পরীক্ষা করানোর উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে।’’