চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ উঠল পূর্ব যাদবপুর এলাকার মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও হয়েছিল। তার পরে সুনীল পাণ্ডে (৪২) নামে ওই রোগীর হৃদ্যন্ত্রের অবস্থা কিছুটা ভাল হলেও বাঁ পায়ে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে। শেষে তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হলেও প্রাণরক্ষা হয়নি। সেপ্টিসিমিয়া হয়ে সোমবার মৃত্যু হয় সুনীলবাবুর। তাঁর স্ত্রী সুজাতার অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ হাসপাতালের এক চিকিৎসক ও তাঁর মেডিক্যাল টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
মেডিকার মেডিক্যাল ডিরেক্টর সৌমেন বসুর দাবি, কোনও গাফিলতি হয়নি। রোগীকে বাঁচানোর জন্য যা করা উচিত, তা করেছেন ও প্রত্যেক ধাপে আগে রোগীর পরিজনের কাউন্সেলিং করে তাঁদের লিখিত অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সুনীলবাবুর অস্ত্রোপচারের আগেই তাঁর স্ত্রীকে জানানো হয়েছিল, ওটি-তে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তিনি তাতেও অস্ত্রোপচারের অনুমতি দিয়েছিলেন। আর এখন শুনছি, তিনি দাবি করছেন, আমরা নাকি বলেছিলাম, পা বাদ দিলেই রোগী বেঁচে যাবেন!’’
হাসপাতালের দাবিকে ‘অসত্য’ বলেছেন সুজাতাদেবী। তাঁর দাবি, ‘‘হাসপাতাল জানায় রোগী চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। কী ভাবে পায়ে সংক্রমণ হল, তা চিকিৎসকেরা জানাতে চাননি। গুরুতর গাফিলতি হয়েছে ওঁদের তরফে। চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্রও আমাদের দেননি। আমাদের আশঙ্কা নথি বিকৃত করা হতে পারে।’’
৬ মার্চ ভোরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সুনীল পাণ্ডে। মেডিকায় স্টেন্ট বসে, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়। তাতে তাঁর হাতের ধমনী ব্যবহৃত হয়। হাসপাতালের দাবি, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। সৌমেন বসু জানান, রোগীর হৃদ্যন্ত্রের পাম্পিং প্রক্রিয়া যখন কমে যায়, তখনই ধমনীর মধ্যে কিছু জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধে। অস্ত্রোপচারের পরে পাম্পিং স্বাভাবিক হলেও রক্তের ক্লট শরীরের নীচের অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বাঁ পায়ে তার অনেকগুলি জমা হয়। শেষে পা কাটতে হয়। তার পরে ডায়ালিসিস করা হয়, শক দেওয়া হয়েছে। প্রোটোকল মেনে কোনও চিকিৎসা বাদ যায়নি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রোগীকে তা-ও বাঁচানো যায়নি।