— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় হোর্ডিংয়ের দাপটের বিষয়টি আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন নাগরিকদের একাংশও। এই বিষয়ে গত মাসে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গড়ল পরিবেশ আদালত। কমিটির সদস্যেরা হলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক জন সিনিয়র বিজ্ঞানী, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক বা তাঁর প্রতিনিধি এবং পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখ্য প্রযুক্তিগত আধিকারিক।
গত ২ মে তাদের নির্দেশে পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, এই কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের
অফিস এ ক্ষেত্রে ‘নোডাল বডি’ হিসাবে কাজ করবে এবং পরিকাঠামোগত সাহায্য করবে। পরিদর্শনে যদি দেখা যায় রামসার তালিকাভুক্ত পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে হোর্ডিং দেওয়ার ফলে আইন লঙ্ঘিত হয়েছে, তা হলে সংশ্লিষ্ট কমিটি জরিমানা নির্ধারণের পাশাপাশি পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ ধার্য করবে এবং এই সমস্যার সমাধান কী ভাবে সম্ভব, সেই সুপারিশও করবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় হোর্ডিংয়ের দাপটের বিষয়টি
সামনে এসেছিল। এ নিয়ে এপ্রিলে মামলা হয় পরিবেশ আদালতে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল, ইএম বাইপাস সংলগ্ন ধাপা মৌজা ও প্রগতি ময়দান থানার অন্তর্ভুক্ত ফাঁকা জমিতে (জে.এল.নম্বর-০২) বেআইনি ভাবে হোর্ডিং, বিল বোর্ড, ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। সেই বিজ্ঞাপন বোর্ডগুলির উপরে এলইডি এবং হ্যালোজেন আলো লাগানো আছে। যেগুলি পেট্রল ও ডিজ়েলচালিত জেনারেটর ও মোটরের মাধ্যমে রাতে জ্বলে।
গত ৯ এপ্রিল মামলার প্রথম শুনানিতে পরিবেশ আদালত জানায়, সংশ্লিষ্ট জমি যে জলাভূমি বা পূর্ব কলকাতা জলাভূমির অংশ, সে ব্যাপারে প্রমাণ দিতে হবে আবেদনকারীকে। কারণ, মূল আবেদনের সঙ্গে এমন নথি জমা দেওয়া হয়নি। তখন আবেদনকারীর আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় উপযুক্ত নথি দাখিলের জন্য সময় চান। যা মঞ্জুর করেছিল আদালত।
এর পরে গত বৃহস্পতিবারের শুনানিতে আদালত জানায়, সংশ্লিষ্ট জমি যে রামসার তালিকাভুক্ত পূর্ব কলকাতা জলাভূমির অংশ, তার প্রমাণস্বরূপ জমির রেকর্ড দাখিল করা হয়েছে আবেদনকারীর তরফে। দিব্যায়ন বলেন, ‘‘আমরা মৌজার মানচিত্র এবং জমির
অন্যান্য রেকর্ড জমা দিই। তার পরেই আদালত কমিটি গঠন করে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়।’’ সেই সঙ্গে মামলার সঙ্গে যুক্ত রাজ্য সরকার, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কলকাতা পুরসভা, কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক-সহ সব পক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে অবস্থান জানিয়ে হলফনামা পেশ করতে বলেছে আদালত। পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ জুলাই।