বুধবার দুপুরে অফিসের কাজে ধানবাদ যাচ্ছিলেন সিঁথির বাসিন্দা অরুণ সাহা। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছেই প্রবল যানজটে আটকে গেলেন। কোনও রকমে মহাত্মা গাঁধী রোড পৌঁছে বাস থেকে নেমে হেঁটে ফের বাসে উঠে যখন হাওড়া পৌঁছলেন, ততক্ষণে ট্রেন ছে়ড়ে গিয়েছে। একই অবস্থা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলের ছাত্রী জ্যোতি অগ্রবালেরও। উত্তর কলকাতায় বাড়ি ফিরতে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আটকে পড়তে হয় তাকেও।
বুধবার দুপুরে মিছিল-মিটিং-অবরোধে কার্যত স্তব্ধ হয়েছিল শহর। লালবাজার জানিয়েছিল, এ দিন কোনও নির্ধারিত মিটিং-মিছিল নেই। ফলে আগে থেকে জানতে না পারায় চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। দুপুর ১টা নাগাদ আইএনটিটিইউসি-র মিছিল রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে ডোরিনা ক্রসিং পৌঁছয়। তার কিছু পরেই সওয়া ২টো থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট মহাত্মা গাঁধী রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ অবরোধ করেন বিজেপি যুব মোর্চার সদস্যেরা। স্তব্ধ হয়ে যায় উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ।
প্রথমে হাওড়াগামী গাড়িগুলিকে নিমতলা ঘাট স্ট্রিট এবং কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে। পরে যানজট বাড়তে থাকায় শ্যামবাজার থেকে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তর থেকে দক্ষিণে আসা সব গাড়ি বিধান সরণি এবং এপিসি রোডের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হতে থাকে। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ এবং ডোরিনা ক্রসিংয়ে মিটিং-মিছিল থাকায় শিয়ালদহ থেকে এস এন ব্যানার্জি রোডে ঢুকেও অনেকে আটকে থাকেন। শহরের মধ্যভাগে প্রবল যানজট থাকায় তার প্রভাব প়ড়ে দক্ষিণেও। এ দিন শহরে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের কারণে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জেরেও কিছুটা ভুগতে হয় শহরবাসীকে। রাহুল ঘোষ নামে এক অফিসযাত্রী বলেন, ‘‘আগে থেকে কিছু না জানিয়েই হঠাৎ হঠাৎ মিছিল। কলকাতায় যাতায়াত করাই এখন বড় সমস্যা।’’
কিন্তু এত মিছিল-মিটিংয়ের কথা কি আগে থেকে জানতে পারেনি পুলিশ? লালবাজারের এক কর্তার সাফাই, ‘‘শুধু রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে কীর্তন ও গায়ক সম্প্রদায়ের মিছিলের কথা আগে থেকে জানা ছিল। আইএনটিটিইউসি-র মিছিলের বিষয়ে অনেক রাতে জানানো হয়। এ ছাড়া, বিজেপি-র পথ অবরোধের খবর বুধবার সকালে নিজস্ব সূত্রে জোগাড় করা হয়। সেই কারণে সাধারণ মানুষকে জানানো সম্ভব হয়নি।’’