ইলিশ মাছের উৎপাদন নিয়ে বিধানসভায় কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি।
প্রতি বছর ইলিশের মরসুমে এ পার বাংলাকে ও পার বাংলার মুখ চেয়ে থাকতে হয়। বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ইলিশের ট্রাক এ পারে ঢোকামাত্র যেন বাঙালির রসনাতৃপ্তির ষোলোকলা পূর্ণ। এ বার বাংলাদেশের উপর ইলিশ নির্ভরতা কমাতে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাঙালিকে ইলিশ খাওয়ানোর মতো নদী-সাগর এ পারেও কম নেই। কিন্তু পদ্মার ইলিশের যোগানের ধারেকাছে আসে না তা। স্বভাবতই ইলিশের মরসুমে বাংলাদেশের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয় এ পারের বাঙালিকে। এ বার ইলিশ নিয়ে বাংলাদেশ নির্ভরতা কাটানোর দাওয়াই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ পার বাংলাতেও ইলিশ উৎপাদন হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারে ইলিশ নিয়ে গবেষণা কেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে প্রতিনিয়ত ইলিশের গতিবিধি নিয়ে গবেষণা চলছে। মমতার দাবি, ‘‘আমাদের ওপারের ইলিশের উপর আর নির্ভর করতে হবে না।’’
ইলিশের বহুমূল্যের কারণে বাজারে ঢেলে বিক্রি হয় খোকা ইলিশ। দামেও কম, আবার স্বাদেও প্রমাণ আকারের ইলিশের ছিটেফোঁটা পাওয়া যায়। কিন্তু বেলাগাম খোকা ইলিশ ধরার ফলে ইলিশের বংশবৃদ্ধি ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যেই খোকা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছেন সরকার। কিন্তু বাজারের ছবিতে সে কথার সমর্থন মেলে না। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেবল আইন করে খোকা ইলিশ ধরা বন্ধ করা যাবে না। মানুষকে সচেতন করতে হবে।’’ বস্তুত, মাছ নিয়ে গবেষণা করেন, এমন বিশেষজ্ঞদের একটি অংশও তেমনই মনে করেন। মানুষকে যদি বোঝানো যায়, খোকা ইলিশ মারলে আদতে ইলিশের বংশবৃদ্ধিই ক্ষতির মুখে পড়ে, তা হলেই একমাত্র এই সমস্যার সমাধান হবে। আইন করে নয়।
মাছচাষ নিয়ে মমতা জানান, বাংলায় অনেক জলাশয় রয়েছে। সেখানে দিব্যি মৎস্যচাষ করা যায়। এ জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা পাড়ার ক্লাবগুলোকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন মৎস্যমন্ত্রীকে। তাতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বাংলার বাজারে মাছের জোগানও বাড়ানো সম্ভব হবে।