Mamata Banerjee

দ্বিতীয়ায় চারশোর বেশি পুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী, স্তোত্র পাঠ করার আগে চেয়ে নিলেন মাফ!

একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোর উদ্বোধনের আগে সেখানে রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য দেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার পরিচিতদের সটান জানিয়ে দেন, ‘সুব্রতদা’র মূর্তিটা ঠিক ভাবে তৈরি হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:০১
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

দ্বিতীয়ার দিনেও কলকাতার বেশ কিছু দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার ভার্চুয়ালি রাজ্যের অনেকগুলো পুজোর উদ্বোধন করেছেন। প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় যে পুজোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই একডালিয়া এভারগ্রিনে উদ্বোধনে গিয়ে স্তোত্র পাঠ করার আগে ক্ষমা চেয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি জানান, আজকাল লোকজন ভুল ধরার জন্য বসে থাকেন। কিন্তু তিনি চণ্ডীপাঠ শিখেছেন বাবার কাছে। আর তাঁর মন্ত্রোচ্চারণের একটি ঘরানা আছে। সেটা কারও পছন্দ হতে পারে, কারও না-ও হতে পারে।

Advertisement

সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন শুক্রবার তিনি ভবানীপুর শীতলা মন্দির, একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহি পার্ক, বালিগঞ্জ কালচারাল, সমাজসেবী সংঘ, হিন্দুস্থান পার্ক, শিব মন্দির, মুদিয়ালি, ৬৬ পল্লী, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজোর উদ্বোধন করেছেন। এ ছাড়া ভার্চুয়ালি জেলার ৪০০টির দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ফেসবুকে লেখেন, ‘‘প্রতি বছর মায়ের পুজো উদ্বোধন করলে মনেপ্রাণে এক অপার শান্তি অনুভব করি। মা সকলকে ভালো রাখুক— এই আমার প্রার্থনা।’’

একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোর উদ্বোধনের আগে সেখানে রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রতের মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য দেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার পরিচিতদের সটান জানিয়ে দেন, ‘সুব্রতদা’র মূর্তিটা ঠিক ভাবে তৈরি হয়নি। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার মূর্তিটা পছন্দ হয়নি। মুখটা ঠিক মতো করতে পারেনি। কে যে করেছেন!’’ ওই পুজোর উদ্বোধনের সময়ও বার বার মমতার কথায় উঠে এসেছে সুব্রত-প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর এক মাস আগে থেকে নবান্নে গিয়ে বলতেন, ‘বল, কবে যাবি এভারগ্রিন?’ যত ক্ষণ ‘টাইম’ না পেতেন, বসে থাকতেন। দেখুন, আজ সবই আছেন। শুধু আমাদের প্রাণের মানুষটা চলে গিয়েছেন।’’ তার পর স্তোত্র পাঠ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইচ্ছা থাকলেও অন্যত্র করা সম্ভব হয়না। কিন্তু প্রতি বার ‘সুব্রতদা’ তাঁকে অনুরোধ করতেন। সে জন্য স্তোত্র পাঠ করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ওঁর কথা মনে রেখেই পড়ছি...।’’ পর ক্ষণেই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘বলব কী, বললেই তো আবার অনেকে ভুল ধরেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দেন, ‘‘দেখুন, এক একটা মন্ত্রের শাস্ত্রে এক এক রকম উচ্চারণ আছে। এক একটা সঙ্গীতে এক এক রকম ধারা আছে। আমি যেটা বলি, সেটা আমার ঘরানা থেকে বলি। এই ঘরানা কারও পছন্দ হতে পারে। কারও না-ও হতে পারে। যাঁর পছন্দ হবে না, আমি তাঁর কাছে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি স্তোত্রপাঠ শিখেছি আমার পিতৃদেবের কাছে। উনি রোজ চণ্ডীপাঠ করতেন। এক সময় তো বেলুড়ের শান্তনু মহারাজ চতুর্থীর দিন আমার বাড়িতে চণ্ডীপাঠ করতেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম (স্তোত্র পাঠ নিয়ে)। তিনি বলেছিলেন, ‘ঠিক আছে’।’’

Advertisement

জেলার দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলির একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার ১৬৫০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সব মিলিয়ে ১৬ লক্ষ ৪৬ হাজার পড়ুয়াকে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ওই সাহায্য করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব থেকে শারদোৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মহালয়ার দিন থেকে শহর, শহরতলি এবং জেলার একাধিক পুজোর উদ্বোধন শুরু করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন কালীঘাট মিলন সংঘ, গড়িয়াহাট হিন্দুস্তান ক্লাব, ২১ পল্লি, বোসপুকুর তালবাগান, ৪১ পল্লি, অজেয় সংহতি, বড়িষা ক্লাব, বেহালা নূতন দল-সহ একাধিক পুজোর উদ্বোধন হয়েছে তাঁর হাত ধরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement