প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে পুলিশের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। গ্রেফতারি পরোয়ানা দ্রুত কার্যকর করতেও বলা হয়েছে। পাশাপাশি, জেলে বসে থাকা দুষ্কৃতীদের নিষ্ক্রিয় করার কাজও শুরু হয়েছে। পুলিশ ও কারা দফতর সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, কলকাতা ও রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতেও তল্লাশি চালাতে হবে। নজর রাখতে হবে সে সব জায়গায় বসে থাকা দুষ্কৃতীদের গতিবিধির উপরে। যাতে ভোটের সময়ে জেলের ভিতরে থাকা দুষ্কৃতীরা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা না করতে পারে। সূত্রের খবর, কলকাতার দু’টি সংশোধনাগার থেকে গত কয়েক মাসে ১১২টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। করোনার আশঙ্কায় বন্দিদের অনেককেই সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তারা অনেকেই জেলে ফেরার সময়ে বিভিন্ন ভাবে মোবাইল নিয়ে আসার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।
জেলে বন্দিদের জন্য বাড়ির খাবার পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তা বন্দিদের কাছে পৌঁছয় তল্লাশির বিভিন্ন স্তর পেরিয়ে। তা সত্ত্বেও জেলের ভিতর থেকে মাঝেমধ্যেই মেলে মাদক, ব্লেড, মোবাইল বা সিম কার্ড। এত কড়াকড়ি সত্ত্বেও ওই সব জিনিস কী ভাবে বন্দিদের কাছে পৌঁছয়, তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। এমনকি, জেলের কর্মীদের একাংশ এই যোগসাজশে জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। এ বার নির্বাচন কমিশন চাইছে, ভোট ঘোষণার আগে থেকেই এ সব নিয়ে সতর্ক হতে। তাই এ নিয়ে পুলিশকেও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে।
কারা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, জেলের কুঠুরির ভিতরে নজরদারি থাকায় জেল চত্বরের গাছের বা পাঁচিলের ফাঁকেই দুষ্কৃতীরা মোবাইল ও সিম কার্ড লুকিয়ে রাখে। অনেক সময়ে তাদের লোকজন পরিলকল্পনা করেই জেলের পাঁচিলের বাইরে থেকে মোবাইল ভিতরে ছুড়ে দেয়। করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দিদের গোলমালের ঘটনার সময়েও বাইরে থেকে জেলের ভিতরে মোবাইল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অনেক সময়েই অভিযোগ ওঠে যে, তারা জেলের ভিতরে বসেই তোলা চেয়ে ফোনে হুমকি দেয় বা নিজেদের দুষ্কর্মের কারবার চালিয়ে যায়। কখনও আবার কোন দলকে ভোট দিতে হবে, তার নির্দেশও দেয় দুষ্কৃতীরা। যে সব সংশোধনাগারে বন্দির সংখ্যা বেশি, সেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলেই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। তাই পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই সব সংশোধনাগারে নিয়মিত তল্লাশি চালাতে হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সন্ধ্যার পরে কিংবা রাতের দিকে তল্লাশি চলছে অনেক জায়গাতেই। কারা দফতর অবশ্য জানাচ্ছে, কমিশনের তরফে তাদের সরাসরি কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পুলিশের সঙ্গে কারা দফতর সহযোগিতা করছে বলেই দাবি এক আধিকারিকের।