প্রতীকী ছবি
রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে ধুন্ধুমার বেধে গেল হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি তো হলই, সেই সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় জখম হন দু’জন। পরে ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। লাইসেন্স থাকা ওই আগ্নেয়াস্ত্রটির মালিক এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, দু’টি দলের মধ্যে ঝামেলার ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে আটক করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেলিলিয়াস রোডে এ দিন একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল তৃণমূলের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটি। ওই শিবিরে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি (শহর) অরূপ রায়। তিনি সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরেই শুরু হয় গন্ডগোল। কেন তাদের না জানিয়ে ওই রক্তদান শিবির করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করে তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী।
অভিযোগ, প্রতিবাদকারীরা যখন রক্তদান শিবিরের সামনে স্লোগান দিচ্ছিলেন সে সময়ে ৫০-৬০ জনের একটি সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল মোটরবাইকে এসে তাঁদের উপরে হামলা চালায় এবং মারধর করে। এমনকি, আগ্নেয়াস্ত্র বার করে গুলি চালানোর চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ। এমন সময় প্রতিবাদকারীরা ধর্মেন্দ্র সিংহ নামে এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন এবং মারধর করেন। বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী ধর্মেন্দ্রের থেকে উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্রটিও। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানেও তাদের উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা এবং মারধর করে। এই ঘটনায় পুলিশ ধর্মেন্দ্র এবং আর এক তৃণমূল কর্মীকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: শপথ নিয়েছি আমরা, ‘আর কেউ প্রিয়াঙ্কা হব না’
স্থানীয় সূত্রের খবর, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর পদের দাবি নিয়ে অরূপবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত প্রেমপ্রকাশ সিংহের সঙ্গে শচীন জয়সওয়ালের বিবাদ দীর্ঘদিনের। এ দিন রক্তদান শিবিরে প্রেমপ্রকাশকে অতিথি হিসেবে দেখে শচীন দলবল নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, সে সময়ে দুষ্কৃতীরা তাদের উপরে চড়াও হলে দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায়।
শচীনের অভিযোগ, ‘‘ওই দুষ্কৃতীরা বটানিক্যাল গার্ডেন, নাজিরগঞ্জ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা নিয়ে এসেছিল। আমাকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হয়। প্রেমপ্রকাশই ধর্মেন্দ্র-সহ বাকি দুষ্কৃতীদের ওখানে এনেছিলেন।’’ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেমপ্রকাশ বলেন, ‘‘এ দিন রক্তদান শিবির চলাকালীন বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী ওদের উপরে হামলা চালায়, মারধর করে। শিবির বন্ধ করে দেওয়ারও চেষ্টা করে। পরে পুলিশ গিয়ে ফের রক্তদান শিবির চালু করে।’’
এ দিনের ঘটনা নিয়ে হাওড়ার তৃণমূল জেলা সভাপতি (শহর) লক্ষ্মীরতন শুক্ল বলেন, ‘‘এই ঘটনা যাঁরাই ঘটান, তাঁরা দলের স্বার্থে করেননি। পুলিশ আইনত সমস্ত ব্যবস্থা নেবে। কারা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’