দিলীপ ঘোষের ‘চায়েপে চর্চা’ ঘিরে সংঘর্ষ লেক টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।
দিলীপ ঘোষের ‘চায়ে পে চর্চা’ ঘিরে উত্তাল লেকটাউন। শুক্রবার সকালে রাজ্য বিজেপির সভাপতির এই কর্মসূচি ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হল তৃণমূল এবং বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। তৃণমূলের হামলায় তাঁদের কর্মী জখম হয়েছেন বলে বিজেপির অভিযোগ। আর তাঁকে ভয় পাচ্ছে বলেই তৃণমূল গোলমাল করছে, কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের। দিলীপকে পাল্টা কটাক্ষ করে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিতের পাল্টা দাবি, দিলীপ এলাকায় ‘বহিরাগত’ তাই স্থানীয়েরা ‘প্রতিরোধ’ করেছেন।
শুক্রবার সকালে লেকটাউনে দিলীপের ‘চায়ে পে চর্চা’ হওয়ার কথা ছিল। সেইমতো সকাল থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বিজেপির কর্মীরা। এলাকায় উত্তেজনাও ছিল। সকাল থেকে তৃণমূলের কর্মীরাও ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন এলাকায়। তৃণমূলের প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কর্মী ভিড় জমিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই নিয়ে দফায় দফায় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
এরপর দিলীপ ঘোষ পৌঁছলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। দিলীপ ঘোষের উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন তাঁরা। যদিও দিলীপ ঘোষের কর্মসূচি তাতে বাধা পায়নি। তিনি গিয়ে প্রস্তুতি মতোই চায়ের ভাঁড় হাতে নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চা’য় বসে পড়েন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: নারদ-কাণ্ডে চার্জশিট পুজোর আগেই, নাম থাকার সম্ভাবনা ৩ তৃণমূল সাংসদের
দিলীপ ঘোষের ‘চায়ে পে চর্চা’ চলাকালীন উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে পের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপির ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেন। লাথি মেরে টেবিল ফেলে দেন। পুলিশ দু’পক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও, সংখ্যায় তুলনামূলক কম থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এই ঘটনায় তাঁদের অনেক কর্মী জখম হয়েছেন, তবে তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর বলে বিজেপি জানিয়েছে। এরপর দিলীপ ঘোষ এলাকা ছেড়ে চলে যান।
আরও পড়ুন: ‘ত’-এ তরোয়ালই চান প্রধানমন্ত্রী
‘চায়ে পে চর্চা’ নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘এটা নতুন কিছু নয়। আমি রোজই মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে কোনও না কোনও পাড়ায় যাই। চায়ের ভাঁড় হাতে রোজই চর্চা চলে।’’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, ‘‘তৃণমূলও নতুন কিছু করেনি। আমি যেখানেই যাই, সেখানেই তৃণমূল আমার হয়ে প্রচারের বন্দোবস্ত করে দেয়। আজও তাই করেছে।’’ আজ লেকটাউনে যে ঘটনা ঘটেছে তা আসলে তৃণমূল ভয় পেয়ে ঘটিয়েছে বলে কটাক্ষও ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।
পাল্টা কটাক্ষ করে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু বলেছেন, ‘‘ওঁদের মনে হচ্ছে জায়গাটা বাছতে ভুল হয়ে গিয়েছে। এই জায়গাটা তৃণমূলের বহু দিনের শক্ত ঘাঁটি। ওঁরা সেটা ঠিকঠাক বুঝতে পারেননি, তাই এখানে এসেছিলেন।’’ সুজিত বসু আরও বলেন, ‘‘বহিরাগতরা এলাকায় এসে অশান্তি করলে স্থানীয়রা তো প্রতিরোধ করবেনই।’’