কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর পরিবারের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (সিএনএমসি) হাসপাতালে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল রবিবার। রোগীর পরিবারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে খোদ পুলিশের বিরুদ্ধে। হাসপাতাল চত্বরে লাঠিচার্জের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছেন রোগীর আত্মীয়েরা। হাসপাতালের সুপারের কাছে এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত একটি ইঞ্জেকশন থেকে। লিখিত অভিযোগে রোগী শাহানওয়াজ় বেগম জানিয়েছেন, তিনি রবিবার বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বেলা ১২টা নাগাদ সিএনএমসি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। প্রথমে গিয়েছিলেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে দেখেন এবং বুকে ব্যথার একটি ইঞ্জেকশন লিখে দেন। হাসপাতালের নার্স ওই ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন। দু’বার দেওয়ার পর তৃতীয় বার ইঞ্জেকশন দেওয়ার কিছু পরে তাঁর বুকে ব্যথা বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। এর পর রোগীর আত্মীয়েরা নার্সকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন ব্যথা কমার পরিবর্তে বেড়ে যাচ্ছে? অভিযোগ, এর পরেই তাঁদের সঙ্গে ওই নার্স এবং হাসপাতালের অন্যরা দুর্ব্যবহার শুরু করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ এবং কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, তাঁদের জরুরি বিভাগ থেকে বার করে দেওয়া হয় এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন রোগী।
রোগী অভিযোগপত্রে আরও জানিয়েছেন, হাসপাতাল চত্বরে তাঁকে এবং তাঁর স্বামীকে মারধর করে পুলিশ। তাঁর ছেলেকেও লাঠির বাড়ি মারা হয়। ঘটনার ভিডিয়ো করা হলে তাতেও পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন রোগী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও প্রয়োজনে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন তাঁরা। রবিবারের ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে রোগীর পরিবার। সেখানে দেখা গিয়েছে, পুরুষ পুলিশকর্মী লাঠির বাড়ি মারছেন এক ব্যক্তিকে। তাঁকে বাঁচাতে মহিলারা এগিয়ে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হচ্ছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
রোগীর পরিবারের আরও অভিযোগ, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ নেওয়া হয়নি। কোনও জেনারেল ডায়েরির নম্বরও দেওয়া হয়নি।
রোগীর পুত্র মহম্মদ শাহদাব বলেন, ‘‘আমরা থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ নেওয়া হয়নি। কিছু একটা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা জানি না। জিডি নম্বর পাইনি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাকে, আমার মাকে, বাবাকে, সকলকে মারধর করা হয়েছে। সাহায্যের জন্য আমরা আত্মীয়দের হাসপাতালে ডাকি। পুলিশ আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করল, তা কি করা যায়? আমরা ওদের শাস্তি চাই। আমরা হাসপাতালে নার্সের সঙ্গে ভাল ভাবেই কথা বলেছি। আমাদের দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ কোনও কথা না বলেই মারধর শুরু করে। আমরা হাসপাতালে কিছুই করিনি, সিসি ক্যামেরায় তা বোঝা যাবে। পুলিশ আমাদের অভিযোগ নিচ্ছে না।’’