BJP Rally on R G Kar issue

স্বাস্থ্য ভবন যেতে পুলিশের বাধা বিজেপিকে, পর পর ব্যারিকেড ভাঙায় উত্তেজনা, শুরুতে ধরা দিলেন শুভেন্দু

বৃহস্পতিবার অনেক আগেই রাস্তার উপরে ব্যারিকেড তৈরি করে রেখেছিল পুলিশ। উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কায় আগে থেকেই বিশাল পুলিশবাহিনীও মোতায়েন ছিল স্বাস্থ্য ভবন যাওয়ার পথে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ১৬:১১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বিজেপির স্বাস্থ্য ভবন অভিযান ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল সল্টলেকে। পূর্বঘোষণা মতো বৃহস্পতিবার দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ রাজ্য বিজেপি নেতারা মিছিল নিয়ে রওনা দেন স্বাস্থ্য ভবনের উদ্দেশে। কিন্তু অনেক আগেই রাস্তার উপরে ব্যারিকেড তৈরি করে রেখেছিল পুলিশ। উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কায় আগে থেকেই বিশাল পুলিশবাহিনীও মোতায়েন ছিল স্বাস্থ্য ভবন যাওয়ার পথে। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিলে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ সব রাজ্য নেতাই যোগ দিয়েছিলেন। মিছিলে ছিলেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়কেরাও। সেই মিছিল পুলিশ আটকে দেয় করুণাময়ীর আগে ইন্দিরা ভবনের সামনে। এর পরেই পুলিশের ব্যারিকেড টপকে অনেক বিজেপি কর্মী স্বাস্থ্য ভবনের দিকে যেতে শুরু করেন। তবে বেশি দূর এগোতে দেয়নি পুলিশ। রাস্তার উপরে আরও ব্যারিকেড ছিল।

Advertisement

সেই সময়েই শুভেন্দু রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রিজ়ন ভ্যানের দিকে এগিয়ে যান। পুলিশ তাঁকে গাড়িতে তোলার পরেও মিছিল এগোতে থাকে। এর পরে পুলিশের হাতে ধরা দেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যও। তবে সুকান্ত পতাকা নিয়ে এগিয়ে যান। সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শমীককে তোলার সময়ে সুকান্তকেও গ্রেফতার করতে চায় পুলিশ। তবে কর্মীরা ছিনিয়ে নেয় সুকান্তকে। সেই সময়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘বাংলায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার একমাত্র সমাধান মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা। সেই দাবিতেই এই অভিযান। পুলিশ বাধা দিলেও আমাদের আন্দোলন চলবে। বিচার না-পাওয়া পর্যন্ত পথেই থাকবে বিজেপি।’’

বৃহস্পতিবারের মিছিলে রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি হাঁটেন প্রাক্তন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহেরা। মিছিলে আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে বিজেপি কর্মীরা প্রতীকী হাতকড়া, ফাঁসির দড়ি নিয়ে হাঁটেন। পুলিশের গাড়িতে বিরোধী দলনেতা-সহ কয়েক জন উঠে যাওয়ার পরেও নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। অনেক বিজেপি কর্মী পুলিশের ভ্যানের সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। তবে খুব কম সময়ের মধ্যে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। এর পরে অর্জুনকে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলতে গেলেও পুলিশকে ধাওয়া করে একদল বিজেপি কর্মী। তবে একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকে বিজেপির মিছিল।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন থেকে চার কিলোমিটার দূরেই বিজেপির মিছিল আটকে দিতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু একটার পরে একটা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় মিছিল। মিছিলের সামনে থাকেন সুকান্ত, দিলীপের সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়ও।

ব্যারিকেড ভেঙে স্বাস্থ্য ভবনের দিকে যেতে চাওয়া অনেক কর্মীকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য দিকে, মিছিল এগোতে থাকে। পুলিশের গাড়িতে উঠেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রেফতার হওয়া কর্মীরা। অনেক বিজেপি কর্মী পুলিশের গাড়ির উপরে উঠেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ অত্যন্ত সংযত ভূমিকায় ছিল। ফলে একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে বিজেপির মিছিল স্বাস্থ্য ভবনের গেটের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। সেখানে মহিলা কর্মীদের নিয়ে রাস্তার উপরে বসে পড়েন অগ্নিমিত্রা পাল। তবে স্বাস্থ্য ভবনের গেটের সামনে বিশাল পুলিশবাহিনী থাকায় বিজেপি কর্মীরা ভিতরে ঢুকতে পারেননি।

এর পরে সুকান্ত, দিলীপরাও স্বাস্থ্য ভবন থেকে ২০০ মিটার দূরে রাস্তার উপরে বসে পড়েন। পরে সেখানেই ছোট একটি সভা হয় বিজেপির। বক্তব্য রাখেন দিলীপ ও সুকান্ত। সেখানে সুকান্ত বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এখনও আগুন নিয়ে খেলছে। কিন্তু এটা করে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আন্দোলন আরও তীব্র আকার নেবে।’’ একই সঙ্গে সুকান্ত বলেন, ‘‘দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি স্বাস্থ্য ভবনের ভিতরে ঢোকার লক্ষ্য নিয়ে আসেনি। বিজেপি সরকারি ভবন ভাঙচুর করতে চায় না।’’ সুকান্ত দাবি করেন, পুলিশ অনেক বাধা দিলেও স্বাস্থ্য ভবনের প্রবেশ দ্বারে পৌঁছে গিয়ে সফল হয়েছে দলের অভিযান।

সেখান থেকেই সুকান্ত ঘোষণা করেন, ‘‘শুক্রবার রাজ্যের সর্বত্র সব থানায় বিক্ষোভ দেখাবে বিজেপি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement