কাজের দিনে আবার থমকে যেতে পারে শহরের গতি। সৌজন্যে শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা।
আজ, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিকেল তিনটের সময়ে শ্যামবাজার থেকে পদযাত্রা শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, ওয়েলিংটন, এস এন ব্যানার্জি রো়ড হয়ে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে পৌঁছবেন তিনি। পুলিশকর্তারা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী দলবল নিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে আসার ফলে মধ্য ও উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকার যানবাহন আটকে দিতে হতে পারে। সেই চাপ গিয়ে পড়তে পারে পুরো কলকাতার যান চলাচলের উপরেও। ফলে সপ্তাহের গোড়াতেই ফের ভুগতে হতে পারে পথে বেরোনো নাগরিকদের।
পুলিশকর্তারা বলছেন, আজ, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই বিধান সরণি, অরবিন্দ সরণি, বিডন স্ট্রিট, বিবেকানন্দ রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, কলেজ স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রো়ডের গাড়ি চলাচল থমকে যেতে পারে। ওই সব এলাকায় গাড়ি থমকে গেলে যানবাহনের চাপ বাড়বে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং এ জে সি বসু-এপিসি রোডে। যানজটের কবলে পড়বে শিয়ালদহ-মৌলালি অঞ্চল। ফলে ওই এলাকাতেও যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ।
লালবাজারের দাবি, মিছিল হলে ওই রাস্তার গাড়িগুলি অন্য রাস্তা দিয়ে ঘোরানো হয়। কোন রাস্তার গাড়ি কোন রাস্তা দিয়ে যাবে, তা পরিস্থিতি আঁচ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর মিছিলের ক্ষেত্রেও যানবাহন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। যদিও পুলিশের অনেকেই বলছেন, ভরদুপুরে শহরের রাস্তায় যা গাড়ির চাপ থাকে তাতে অন্য রাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়েও কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় কয়েক হাজার লোক হবেই। অত লোকের মিছিল যেতে যা সময় লাগবে, তাতে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়তেই পারে।’’ কলকাতা পুলিশে কাজ করে যাওয়া এক ট্রাফিক পুলিশকর্মীর বক্তব্য, মিছিল যখন কলেজ স্ট্রিট পার করে ওয়েলিংটন পৌঁছবে, তখন এক দিকে ধর্মতলা,অন্য দিকে শিয়ালদহ অবরুদ্ধে হয়ে পড়ার আশঙ্কা।
পুলিশ সূত্রের মতে, শ্যামবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়। উত্তর শহরতলি থেকে যানবাহনের একটা বড় অংশ ওই মোড় দিয়েই কলকাতায় ঢোকে। মুখ্যমন্ত্রীর মিছিল থাকার ফলে ওই মোড়ে যানবাহনের গতিবিধি দুপুর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে উত্তর কলকাতার সংযোগকারী দু’টি মূল রাস্তা রয়েছে। একটি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, অন্যটি এ জে সি বসু রোড-এপিসি রোড। এই দু’টি রাস্তা একাধিক রাস্তার মাধ্যমে যুক্ত এবং এই দু’টি রাস্তার মাঝখান দিয়ে সমান্তরাল ভাবে গিয়েছে বিধান সরণি। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলছেন, বিধান সরণি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মিছিল যাওয়ার জন্য ওই রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে। তার ফলে এপিসি রোড-এজেসি বসু রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগকারী রাস্তার গাড়ি চলাচলেও প্রভাব পড়তে পারে। যানজটের কবলে পড়তে পারে শিয়ালদহ চত্বরও।
লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের এক অফিসার বলেন, শ্যামবাজারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ মোড় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং। মিছিল সেখানে এসেই শেষ হওয়ার কথা। তাই ওই মোড়ও বিকেলে বেশ কিছু ক্ষণ আটকে রাখতে হবে। তার ফলে বিকেলে অফিস ফেরত যাত্রীদের ভুগতে হতে পারে। নিউ মার্কেট এলাকায় যে সব লোকজন কেনাকাটা করতে আসবেন, ভোগান্তি হতে পারে তাঁদেরও।