মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতায় সভা করতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়ে সভা করছেন শুভেন্দু অধিকারীরা। তখন বিধানসভায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবারও রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের টাকা-সহ ‘বকেয়া’র দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি, তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হেনস্থারও অভিযোগ করলেন মমতা। বুধবার বিধানসভায় তিনি বিরোধী দলের বিধায়কদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘দিনের পর দিন বিধায়কদের তহবিলে টাকা বাড়ানো হয়। তখন তো বলেন না? রাজ্যের ২১ লক্ষ মানুষের টাকা আটকে রাখা হয়। অনেকের কোটি কোটি টাকা আছে, যাঁদের দরকার নেই। ২১ লক্ষ মানুষের টাকা আটকে রাখা হয়, তখন আপনাদের মন কাঁদে না। আর একটার বদলে দুটি বিড়ি খেলে চোর বলে!’’
বস্তুত, বুধবার দুপুরে যখন বিধানসভায় মমতা বলছেন, তখন ধর্মতলার সভায় বক্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার শুভেন্দুকে শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুরা যখন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে আক্রমণ শানান, তখন বিধানসভায় মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’ এবং ‘প্রতিহিংসার রাজনীতির’ অভিযোগ।
মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি সব কিনে নিয়েছে! ১০০ দিনের কাজ। আবাস যোজনা, রাস্তার কাজের টাকা দেয়নি। জিএসটির নামে কর তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভাজা হচ্ছে।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘ভোটের সময় এবং ভোটের আগে-পরে সন্ত্রাসের অভিযোগ করে দল পাঠায় বিজেপি। অন্য দিকে, তৃণমূল বিধায়কদের বাড়িতে ইডি-সিবিআই পাঠানো হচ্ছে।’’
বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘‘আমি জীবন্ত মা দুর্গা সাজলে কেউ গ্রহণ করবে না। সব দলেই ভাল এবং খারাপ আছে। সিপিএম বা ও দিক (বিজেপি) থেকে আসা লোক অন্যায় করতে পারে। ব্যবস্থা নিয়েছি। আর কৃষ্ণ কল্যাণী, তন্ময় ঘোষকে হুমকি দিয়ে বলেছে তোমার বাড়িতে ইডি যাবে। চলে গেল!’’ উল্লেখ্য, বিজেপিত্যাগী কৃষ্ণ কল্যাণী অভিযোগ করেছিলেন, বিধানসভায় তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলা হয়েছিল, তাঁর বাড়িতে আয়কর হানা হবে। ঘটনাক্রমে কয়েক মাস আগে কৃষ্ণের বাড়িতে ইডি এবং আয়কর অভিযান হয়।
অন্য দিকে, বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় টাকা রাখছে, খোঁজ রাখছি। দিল্লিতে ক্ষমতায় আছে। তাই, ইডি-সিবিআইয়ের ব্যবহার হবে। তোমরা যখন ক্ষমতায় থাকবে না, তখন মানুষের উপর অত্যাচারের কড়ায়-গন্ডায় হিসেব হবে।’’