মা উড়ালপুলের উপরে দাঁড়িয়ে যুবক। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
উড়ালপুলের মাথায় উঁচু লোহার বিমের উপরে বসে এক যুবক। মাথায় সাদা কাপড় বাঁধা। মাঝেমধ্যে পকেট থেকে ফোন করে কথা বলে চলেছেন। কখনও আবার উঠে দাঁড়িয়ে পায়চারি করছেন। কখনও ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মাঝেমধ্যে লোহার বিমের উপরে দাঁড়িয়ে সমানে কিছু বলে যাচ্ছেন।
রবিবার সকালে মা উড়ালপুলের চার নম্বর সেতুর লোহার বিমের উপরে ওই যুবককে এ ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। দ্রুত তাঁরা পুলিশে ফোন করে বিষয়টি জানান। খবর দেওয়া হয় দমকলেও। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। আসেন দমকলকর্মী এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তাঁরা ওই যুবককে বুঝিয়ে নীচে নামানোর তোড়জোড় শুরু করলেও প্রথমে তিনি নামতে চাননি। এমনকি দমকলকর্মীদের সঙ্গে বচসাও জুড়ে দেন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই যুবককে কোনও মতে বুঝিয়ে মই দিয়ে নীচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন দমকলকর্মীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুবক চার নম্বর সেতু সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। খাবার, চা-বিস্কুট নিয়ে তিনি এ দিন সেতুর উপরে উঠে পড়েন। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ ওই যুবককে পার্ক সার্কাস স্টেশন সংলগ্ন, মা উড়ালপুলের চার নম্বর সেতুর লোহার বিমের উপরে বসে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিক ভাবে তাঁকে দেখতে মা উড়ালপুলে দাঁড়িয়ে যায় সার সার গাড়ি। ভিড় জমে পাশের পার্ক সার্কাস স্টেশন চত্বরেও। প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক বলেন, ‘‘প্রথমে দেখার পরেই সকলে চিৎকার করে ওই যুবককে নীচে নেমে আসার কথা বলছিলেন। কিন্তু তিনি কোনও কথা না শুনে চিৎকার করছিলেন। ধর্মে ধর্মে কেন এত বিভেদ— চিৎকার করে
এই নিয়ে বলতে চাইছিলেন। তাঁর হাতে থাকা পতাকাও দেখাচ্ছিলেন।’’
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। উদ্ধারের পরে তাঁকে নামিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান কড়েয়া থানার পুলিশকর্মীরা। তবে কী ভাবে ওই যুবক উড়ালপুলের বিমের উপরে উঠে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মা উড়ালপুলের প্রায় মাঝ বরাবর চার নম্বর সেতুর কাছে তিনি কী করে পৌঁছলেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ওই যুবকের অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। এক
পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আমরা গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। ওই যুবকের শারীরিক বা মানসিক কোনও সমস্যা আছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’