আরজি করে সিবিআই। ছবি: সারমিন বেগম।
আবারও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে গেল সিবিআইয়ের একটি দল। এর আগেও একাধিক বার তদন্তের স্বার্থে হাসপাতালে যায় সিবিআই। ঘটনাস্থল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখে তারা। কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। শুক্রবার তদন্তকারীরা হাসপাতালের অধ্যক্ষ যে বিল্ডিংয়ে বসেন, সেই প্ল্যাটিনাম জুবলি বিল্ডিংয়ে গিয়েছেন। তার পাশাপাশি, অন্যান্য জায়গাও ঘুরে দেখছেন তাঁরা।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগ বিল্ডিংয়ের চার তলার সেমিনার রুম থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত এক মাস ধরে উত্তাল রাজ্য। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার উপস্থিত ছিলেন। তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে বলেও খবর তদন্তকারী সূত্রে।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষেরা। লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরাও। বিভিন্ন পেশার মানুষ এক যোগে সরব। সুপ্রিম কোর্টও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এই মামলার শুনানি করছে। গত শুনানিতে সিবিআই এই মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের কাছে জমা করেছে। তবে সেই রিপোর্টে কী আছে তা এখনও জানা যায়নি।
তদন্তের সূত্রে এর আগে বেশ কয়েক বার আরজি করে গিয়েছে সিবিআই। ঘটনাস্থলে থ্রিডি ম্যাপিংও করা হয়েছে। ধৃত-সহ সাত জনের পলিগ্রাফ টেস্ট করেছে সিবিআই। এ বার ধৃতের নার্কো টেস্ট করানোর আর্জি জানানো হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা উঠে এসেছে, তার সত্যতা যাচাই করতেই সিবিআই ধৃতের নার্কো টেস্ট করাতে চাইছে।
চিকিৎসক খুনের ঘটনার আবহেই এই আরজি কর মেডিক্যালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ ওঠে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। সে বিষয়ে তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়। এক দিন পরেই উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের পরিবর্তে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে একাধিক বেনিয়মের তত্ত্ব উঠে এসেছে। মর্গ থেকে দেহ উধাও হওয়া থেকে শুরু করে রয়েছে হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও! এ বিষয়ে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার। সেই মামলার তদন্তের সূত্র ধরেও আরজি করে এর আগেও গিয়েছে সিবিআইয়ের দল।