আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ধৃত আশিস পাণ্ডে। —ফাইল চিত্র।
শুধু জুনিয়র ডাক্তার বা চিকিৎসক পড়ুয়াদের নয়, আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারদেরও হুমকি দিতেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা আশিস পাণ্ডে। শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করিয়েছিল সিবিআই। সেখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, হাসপাতালে হুমকি দিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিলেন আশিস। তোলাবাজিও করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আদালতে জানানো হয়েছে। আশিসের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। তিন দিন তাঁকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আশিসকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে সিবিআই। অভিযোগ, আশিস হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ। আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গেও তাঁর যোগ রয়েছে। এর আগে এই মামলায় নিজাম প্যালেসে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে আরজি কর হাসপাতালে একটি সিন্ডিকেট চলছে। ২০২১ সালে তাতে যোগ দেন সন্দীপ। হাসপাতালের হাউ স্টাফ হিসাবে ২০২৩-২৪ সালে আসেন আশিস। আরজি করেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। সন্দীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে ধীরে ধীরে তিনি হাসপাতালের হুমকি সংস্কৃতির মাথা হয়ে উঠেছিলেন। বেআইনি ভাবে হাউজ স্টাফ নিয়োগের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা তুলতেন বলে অভিযোগ। এই ঘুষের টাকা আশিসের হাত ধরে পৌঁছে যেন সন্দীপদের কাছে।
এর পরেই সিবিআই জানায়, আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারদের হুমকি দিতেন আশিস। তাঁর কথা অনুযায়ী না চললে প্রত্যন্ত গ্রামে বদলি করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হত। সিবিআইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আশিসের আইনজীবীর যুক্তি, ‘‘এত জুনিয়র ছেলে কী ভাবে সিনিয়রদের হুমকি দেবেন?’’ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, কে কবে ঘুষ দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি সিবিআই। কাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা এই তথ্য পেয়েছে, তা-ও জানানো হয়নি। সন্দীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা প্রসঙ্গে আশিসের আইনজীবী বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকা অপরাধ হতে পারে না।’’
উভয় পক্ষের যুক্তি শুনে বিচারক জানান, আশিসের বিরুদ্ধে যে সমস্ত তথ্য সিবিআই আদালতে জমা দিয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাঁকে এখনই জামিনে মুক্তি দেওয়া যাবে না। আগামী সোমবার পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে থাকতে হবে আশিসকে। তাঁর মোবাইল-সহ সাতটি জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।