চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদার। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুরের সেনা আবাসে চিকিৎসক প্রজ্ঞাদীপা হালদারের মৃত্যু-রহস্য নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্টও। বৃহস্পতিবার ওই মামলায় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, দেহে ১৪টি আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও কেন খুনের মামলা রুজু হয়নি? ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হলে শরীরে আঘাতের চিহ্ন এল কী ভাবে? ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক তাঁর রিপোর্টে কেন আঘাতের চিহ্নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, ময়না তদন্তের রিপোর্টএসএসকেএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের দেখিয়ে মতামত নিতে হবে। তবে, এই মামলা আপাতত সিআইডি-র হাতে যাচ্ছে না। মামলার পরবর্তী শুনানি ২১ অগস্ট।
জুন মাসে ব্যারাকপুরের সেনা আবাসন থেকে প্রজ্ঞাদীপার ফাঁস লাগা দেহ উদ্ধার করা হয়। সেনা চিকিৎসক কৌশিক সর্বাধিকারীর সঙ্গে থাকতেন প্রজ্ঞাদীপা। ঘটনার পর থেকেই তাঁর মৃত্যুর পিছনে কৌশিকের ভূমিকা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। কৌশিককে পরে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটিকে ব্যারাকপুর পুলিশ আত্মহত্যা বলেই মনে করেছে। পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাই কোর্টে মামলা করেন প্রজ্ঞাদীপার মা ঝর্না হালদার। তাঁর আর্জি, তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি বা সিবিআই-কে দেওয়া হোক।
সেই মামলাতেই এ দিন পুলিশি তদন্তের একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিচারপতি সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, প্রজ্ঞাদীপার শরীরে আঘাতের চিহ্ন কী ভাবে এল, তা জানা জরুরি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং কেস ডায়েরি দেখা প্রয়োজন। মৃতার পরিবারের বক্তব্য, কেন তাদের বক্তব্যের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়নি এবং ঝর্নার গোপন জবানবন্দি নথিবদ্ধ করা হয়নি, তা-ও জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।
ঝর্নার আইনজীবী লিটন মৈত্রের বক্তব্য, প্রজ্ঞাদীপাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তা আড়াল করতে চাইছে। কৌশিক নিজেও চিকিৎসক হওয়ায় ময়না তদন্তকারী চিকিৎসককে প্রভাবিত করতে চেয়েছেন এবং সেই প্রমাণও আছে বলে ওই আইনজীবী দাবি করেছেন। যদিও রাজ্যের কৌঁসুলি কোর্টে দাবি করেন, ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রজ্ঞাদীপা গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন। সুইসাইড নোট মিলেছে। প্রজ্ঞাদীপা যে মানসিক ভাবে স্থির ছিলেন না এবং অবসাদে ভুগছিলেন, তার প্রমাণও মিলেছে।