—প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি পার্কিং সমস্যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিধাননগর পুর এলাকায় বেআইনি পার্কিং সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। বেআইনি পার্কংয়ের অভিযোগ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, “আমাদের কোনও নির্দেশই সাহায্য করতে পারবে না, যদি কারও কিছু করার ইচ্ছা না থাকে। আবার দেখতে হবে এই ইচ্ছাটা কোন ধরনের। প্রশাসনিক ইচ্ছা, না কি রাজনৈতিক ইচ্ছা।”
মামলাকারী মূলত চারটি দাবি তুলে ধরেছেন আদালতে। পার্কিং সমস্যা মেটাতে যাতে নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করা হয়। কোথায় বিনামূল্যে পার্কিং, কোথায় টাকার বিনিময়ে পার্কিং— সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় বোর্ড ব্যবহার করা হোক। যাঁরা পার্কিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের একটি নির্দিষ্ট পোশাক রাখা হোক এবং ইলেকট্রনিক বিলের ব্যবস্থা করা হোক। মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে জানানো হয়, বিধাননগরে পার্কিং সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়েছে। তবে মামলাকারীর যদি নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকে, তা তিনি জানাতে পারেন। সে কথা শুনে রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “আপনারা ওই ভাবেই কাজ করুন। আপনার চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রতিনিধি, তিনি সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর জনগণ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।” বিধাননগর পুরসভার কমিশনারকে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বেআইনি পার্কিং সমস্যা মেটাতে দ্রুত দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম পর্যবেক্ষণে জানান, পার্কিং সংক্রান্ত এই সমস্যা শুধু ওই নির্দিষ্ট এলাকায় নয়, এই সমস্যা রাজ্যের সব শহরেই। উচ্চ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, পুরসভার যদি কোনও সদিচ্ছা না থাকে, তবে এটির সমাধান করা সম্ভব নয়। মামলার শুনানি চলাকালীন হাই কোর্ট চত্বরে পার্কিং ব্যবস্থা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, আইনজীবী ছাড়াও অনেকে গাড়ি পার্ক করে রাখেন হাই কোর্ট চত্বরে।
পাশাপাশি রাজ্যের বাস পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের মন্তব্য, “যে বাসগুলি ফেলে দেওয়ার, আপনারা সেগুলি চালাচ্ছেন। চালক, কন্ডাক্টর-সহ যাত্রীদের জন্যও তা বিপদের হয়ে উঠছে। আপনাদের পরিবর্তন চোখে পড়ছে না। নিজেদের মানসিকতা পরিবর্তন করুন। বাসের ভাড়া কবে নির্ধারণ করেছেন? হয়তো ২০ বছর আগে। তাই তো বাসমালিকেরা খরচ বাঁচাতে কেরোসিন বা বাজে তেল ব্যবহার করেন।” এই পরিস্থিতির কবে পরিবর্তন হবে, সে নিয়েও রাজ্যকে প্রশ্ন করে হাই কোর্ট।