কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকার বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ফের রাজ্য প্রশাসনকে কার্যত কাঠগড়ায় দাঁড় করাল কলকাতা হাই কোর্ট। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পরে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতেই বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কলকাতা ও বিধাননগরের বিভিন্ন এলাকায় জলা ভরাট এবং বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। প্রশাসন রিপোর্ট দিয়েই ক্ষান্ত থাকছে, কাজের কাজ করছে না। এ দিন বেআইনি নির্মাণ নিয়ে রাজ্যের কাছে ফের রিপোর্ট তলব করে প্রধান বিচারপতির হুঁশিয়ারি, রিপোর্ট সন্তোষজনক না হলে পৃথক একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে এই মামলার শুনানি হবে।
এ দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে শুধু সরকারি বিধিনিষেধ তৈরি করে কিছু হবে না। আগে রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে কি না, সেটা দেখুন। যে সব এলাকায় বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, সেখানকার পুরপ্রতিনিধি তার কিছুই জানেন না, এটা হতে পারে না। এমন প্রতিনিধিদের পদে থাকার অধিকার নেই। শুধু সরকারি অফিসারদের দোষ দিয়ে বা তাঁদের শাস্তি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আগে সৎ ভাবে এই বেআইনি বন্ধ করার ইচ্ছে দেখাতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বিধাননগর, হাওড়া এবং কলকাতার একাধিক বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে কড়া পদক্ষেপ করেছেন হাই কোর্টেরই বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
এ দিন মামলাকারীদের এক জনের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি আদালতে আবেদন জানিয়েছেন যে, বৈধ নির্মাণ-নকশা ছাড়া কোনও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করা যাবে না, এই নিয়ম চালু হওয়া উচিত। প্রধান বিচারপতি তাতে সহমত পোষণ করেছেন। এ ছাড়়াও, গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বাড়ির প্রোমোটার এবং সংশ্লিষ্ট পুরপ্রতিনিধিকেও মামলায় যুক্ত করতে বলেছে কোর্ট।
অনেকেই বলছেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় বেআইনি নির্মাণ দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। এ ব্যাপারে তাদের সক্রিয়তা কার্যত দেখাই যেত না। গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যুর পরে কোর্ট এ নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ দেয়। কিন্তু আদালত না বললে কেন প্রশাসন সক্রিয় হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।