পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের ভূমিকার সমালোচনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আসন্ন কলকাতা বইমেলায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-কে স্টল বসানোর অনুমতি না দেওয়ায় পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের ভূমিকার সমালোচনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। কেন ওই সংগঠনকে স্টল তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিংহ মৌখিক ভাবে জানান, বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে বইয়ের স্টল তৈরির জন্য জায়গা দিতে হবে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন গিল্ডকে নিজেদের অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বইয়ের স্টল দিতে চেয়ে গিল্ডের কাছে আবেদন করেছিল ভিএইচপি। সেই অনুমতি না মেলায় হাই কোর্টে মামলা করে তারা। গিল্ডের বক্তব্য, সঠিক ভাবে আবেদন জানায়নি ওই সংস্থাটি। গিল্ডের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ভিএইচপি ‘স্পর্শকাতর’ বই প্রকাশ করে। তা ছাড়া তারা আসলে কোনও বই প্রকাশ করে না। বই প্রকাশ হয় বিশ্ব হিন্দু বার্তা নামক প্রকাশনা সংস্থা থেকে। বইমেলায় তারাই স্টল দিতে পারে, যারা বই প্রকাশ বা বিক্রি করে। ভিএইচপির আইনজীবীর সওয়াল, বিশ্ব হিন্দু বার্তা তাদেরই সংস্থা। ২০১১ সাল থেকে তারা বইমেলায় স্টল দিয়ে আসছে।
গিল্ডের উদ্দেশে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে ওই সংগঠনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন কেন দেওয়া হবে না? তারা কী স্পর্শকাতর বই প্রকাশ করেছে, তা আগে কেন জানাননি? এত দিন স্পর্শকাতর বই প্রকাশ করেনি, হঠাৎ এখন স্পর্শকাতর বই প্রকাশ করছে?’’ গিল্ডের আইনজীবী জানান, চলতি বছর থেকে বইমেলায় কিছু নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। বিচারপতি পাল্টা বলেন, ‘‘আপনাদের কোনও বিধিবদ্ধ নিয়ম নেই, যে নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে। কেন এত বছর অনুমতি দিয়েছিলেন? নিজেদের নিয়ম খুশি মতো নিজেরা তৈরি করছেন।’’
গিল্ডের উদ্দেশে বিচারপতি সিংহের আরও মন্তব্য, ‘‘সব কিছুর সীমা রয়েছে। আপনাদের কিছু শিষ্টাচার থাকা দরকার। এমন আচরণ করবেন না, যা গ্রহণ করা সম্ভব নয়!’’ এর পরে হাই কোর্ট মৌখিক ভাবে জানায়, ইতিমধ্যে যে হেতু জায়গা বণ্টন হয়ে গিয়েছে, তাই ভিএইচপিকে নতুন জায়গা দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে। পরবর্তী শুনানির দিন নিজেদের অবস্থান জানাতে পারবে গিল্ড।