Holi

Holi: রঙের বাজারে সাবধানি ব্যবসায়ীরা, জোগানে তাই টান

সাধারণত রবিবার বড়বাজার বন্ধ থাকে। আগামী শুক্রবার রং উৎসবের কথা ভেবে এ দিন খোলা ছিল বড়বাজারের রঙের দোকান।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২২ ০৬:২৭
Share:

রংমিলান্তি: সামনে দোল, তার আগে চলছে কেনাকাটা। রবিবার, বড়বাজারে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

করোনার কারণে, দু’বছর আবির না খেলার খিদে যেন এ বারেই মিটিয়ে নিতে চাইছেন অনেকে। আর তাই আবির আর রঙের চাহিদার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন রং কারবারিরা। বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, আবির বা রঙের চাহিদা অনুযায়ী জোগান এ বার কিছু হলেও কম। কারণ, করোনা পরিস্থিতির কথা ভেবে আবির প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি এ বার উৎপাদন করেছে প্রতি বছরের তুলনায় কম। শেষ মুহূর্তে তাই জোগান দিতে নাকাল অবস্থা বহু ব্যবসায়ীর।

Advertisement

সাধারণত রবিবার বড়বাজার বন্ধ থাকে। আগামী শুক্রবার রং উৎসবের কথা ভেবে এ দিন খোলা ছিল বড়বাজারের রঙের দোকান। শোভাবাজার থেকে আসা এক ক্রেতা সুজয় বসু বলেন, ‘‘২০২০ সালে দোলের আগেই করোনা সংক্রমণ শুরু হচ্ছিল। ফলে দোল খেলা উচিত হবে কি হবে না, সেটা নিয়ে সংশয় ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই আমরা অনেকে তাই রং খেলতে পারিনি। আবার ২০২১-এ করোনার মধ্যে তো প্রশ্নই ওঠেনি রং খেলার। এ বার দোলে ভাল করে খেলতে চাই। তাই বড়বাজার থেকে রং কিনতে এসেছি। কিন্তু মনের মতো সব রং পাওয়া যাচ্ছে না।’’ টালিগঞ্জের নেতাজিনগর থেকে আসা টুবলু সামন্ত বলে ওঠেন, ‘‘বড়বাজারে আবির কিনতে যাচ্ছি শুনে পাড়ার চার জন কয়েক রকম রঙের আবির কেনার বরাত দিয়েছেন। সমস্যা হল সব রং পাওয়া যাচ্ছে না। গোলাপি রঙের আবির বেশির ভাগ দোকানেই নেই।’’

এ বার কেন চাহিদার তুলনায় জোগান কিছুটা হলেও কম? বড়বাজারের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী সমীরণ পাল বলেন, ‘‘এ বছর আবির এবং রং প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ব্যবসা নিয়ে দ্বিধায় ছিল। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বছরের শুরুতে আচমকা তৃতীয় ঢেউ এসে পড়েছিল। তাই অনেকেই ফের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলেন। তখন রং খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে মনে করেই স্বাভাবিক সময়ের থেকে কম উৎপাদন হওয়ায় জোগানেও ঘাটতি হয়েছে।’’

Advertisement

গত সাত দিনে আবির এবং রঙের চাহিদা যে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে মানছেন সমীরণ। অথচ এখন নতুন করে উৎপাদন বৃদ্ধি করে আর পরিস্থিতি সামালানোর মতো অবস্থা নেই, সেটাও স্বীকার করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের কথায়, ভিন্ রাজ্য থেকে অনেক শ্রমিক দোলের আগে আবির প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিতে কাজে আসেন। কিন্তু এ বছর তাঁরা অনেকেই আসেননি। ফলে শ্রমিক কম থাকায় শেষ মুহূর্তে আবিরের চাহিদা বাড়লেও সংস্থাগুলির পক্ষে জোগান বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

তবু যাঁরা বড়বাজারে আবির কিনতে আসছেন, তাঁদেরকে নিরাশ করছেন না বলে দাবি করলেন আবির বিক্রেতা দীপঙ্কর পাল। তিনি জানান, ক্রেতা যে রংটা চাইছেন সেটা তাঁর কাছে না থাকলে তিনি বলে দিচ্ছেন, কোন দোকানে তা পেতে পারেন। দীপঙ্কর বলেন, ‘‘আবিরের চাহিদাই সব থেকে বেশি। সঙ্গে রং, পিচকারি, বিভিন্ন ধরনের মুখোশ, পরচুলার ভাল চাহিদা আছে।’’ আবির ও রং ব্যবসায়ী জয়ন্ত পাল বললেন, ‘‘শুধু চিন নয় দিল্লিতেও কয়েকটি সংস্থা পিচকারি তৈরি করে। তারাও এ বার উৎপাদন কম করেছে। এ রাজ্যেও প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো কম পিচকারি তৈরি করেছে। গত দু’বছরের মজুত জিনিস খালি করার চেষ্টাই মূলত হচ্ছিল। আচমকা চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আর জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’

অন্য জেলা এবং ভিন্ রাজ্য থেকেও বড়বাজারে দোল খেলার সামগ্রী ক্রেতা কিনতে আসেন। অনেকেই পাইকারি হারে সে সব কিনে নিয়ে যান। রঙের বাজারে এ বছরের নয়া সংযোজন ফ্লুরোসেন্ট রং। এ বার বাজার মাতাতে এসে গিয়েছে আবিরের নতুন এই রং। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই রঙের চাহিদা বেশ ভালই। তবে ক্রেতাদের মতে, আগের থেকে দাম বেড়েছে আবির, ভেষজ আবির এবং রঙের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement