বাসে বসাতে বসবে নতুন কিউআর কোড। ফাইল ছবি।
বাসের রেষারেষি কমাতে কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর কথা ভাবছে পরিবহণ দফতর। কিন্তু নতুন এই পদ্ধতি চালু করা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন বাস মালিকরা। একটি অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট রুটের কোনও বেসরকারি বাসের খবর জানতে কিউআর কোড চালু করতে চায় পরিবহণ দফতর। স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার আগে সেই বেসরকারি বাসের কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে চালককে। বাসের ভিতরে দেওয়ালে সেই কিউআর কোড সাঁটা থাকবে। এক বার স্ক্যান করলেই সেই বাসের হদিস যাত্রীরা যেমন পেয়ে যাবেন, তেমনই ওই বাস রাস্তায় কী ভাবে এবং কতটা বিধি মেনে ছুটছে, তা-ও জানতে পারবেন পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।
কিন্তু এই পদ্ধতি চালুর ক্ষেত্রে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন বেসরকারি বাস মালিকরা। তাঁদের কথায়, করোনা সংক্রমণের সময় ধাপে ধাপে যে লকডাউন পরিস্থিতি হয়েছিল, তাতে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার কোমর ভেঙে গিয়েছে। আবার কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ টাকা খরচ করে ভেহিকলস লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) লাগাতে বাধ্য হন বেসরকারি বাস মালিকেরা। কিন্তু সেই পরিষেবা কতদূর বাস্তব পরিস্থিতিতে কাজে লেগেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা। কারণ, গত পাঁচ বছরে বাসের ভাড়া বাড়েনি। তাই বাস চালিয়ে আর সে ভাবে লাভ হচ্ছে না। আর তার মধ্যেই নিত্যনতুন প্রযুক্তি গাঁটের কড়ি খরচ করে বাসে লাগাতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাস চালিয়ে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না বলেই অভিযোগ। তাদের আশঙ্কা নতুন এই প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি ঘটলে, আবারও তাদের অর্থই খরচ হবে। কারণ এমন প্রযুক্তি লাগানোর ক্ষেত্রে সরকারপক্ষ থেকে কোনও সহযোগিতা পান না বাস মালিকরা, এমনটাই অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতর কিউআর কোড নিয়ে যে নতুন পদ্ধতি চালু করতে চাইছে, তা বাস মালিকদের বিষয় নয়। চালকের সচেতনতার উপরেই গোটা বিষয়টি নির্ভর করে। তার জন্য প্রশিক্ষণ শিবির করা জরুরি। সরকারকে আরও সহনশীল হতে হবে। তবে পরিবহণ দফতর যেন মনে রাখেন যে কিউআর কোড চালু করতে কোনও আর্থিক দায় যেন বাস মালিকদের ওপর না বর্তায়।’’ প্রাথমিক ভাবে বিমানবন্দর-কেন্দ্রিক সরকারি ভলভো এবং বাতানুকূল বাসের রুটগুলিকে ‘যাত্রী সাথী’ অ্যাপের আওতায় আনার কথা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই বিমানবন্দরমুখী রুটের পাশাপাশি আরও কয়েকটি রুটের বেসরকারি বাসকে ‘যাত্রী সাথী’ অ্যাপের আওতায় আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। পাইলট প্রকল্প হিসাবে সরকারি বাসের পাশাপাশি আপাতত ১২টি রুটের বেসরকারি বাসকেও অ্যাপের আওতায় আনতে চলেছে প্রশাসন।